দুই মাস আগে আত্মপ্রকাশ করে আলোচনায় আসে রক ব্যান্ড ‘দ্য ভেলভেট সানডাউন’। ইউটিউব ও স্পটিফাইসহ বিভিন্ন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের টপ চার্টে জায়গা পাওয়া এই ব্যান্ডকে প্রথমে নতুন কোনো দল মনে করা হলেও পরে জানা যায়— পুরো ব্যান্ডই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি।
ব্যান্ডটির প্রথম অ্যালবাম ফ্লোটিং অন ইকোজ প্রকাশিত হয় ৫ জুন। এর গান ডাস্ট অন দ্য উইন্ড ২৯ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাজ্য, নরওয়ে ও সুইডেনের স্পটিফাই ‘ভাইরাল ৫০’ চার্টে শীর্ষে ছিল। নিজেদের পরিচিতিতে তারা জানিয়েছে— সব চরিত্র, গল্প, গান, কণ্ঠ ও কথা এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি, যা তারা সৃজনশীলতার একটি যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
তবে ইন্টারন্যাশনাল কনফেডারেশন অব সোসাইটিজ অব অথরস অ্যান্ড কম্পোজার্স (সিআইএসএসি) সতর্ক করে বলেছে, এভাবে এআই ব্যবহারের প্রবণতা অব্যাহত থাকলে চার বছরের মধ্যে বিশ্বজুড়ে গান রচয়িতা ও সুরকারদের আয় ২০% পর্যন্ত কমতে পারে। তাদের মতে, এটি শিল্পীর স্বত্ব, রয়্যালটি ও কর্মসংস্থানে সরাসরি প্রভাব ফেলবে।
রেকর্ড লেবেলগুলোর সংগঠন আইএফপিআইয়ের প্রধান আইন কর্মকর্তা লরি রিচার্ড বলেছেন, অনুমতি বা লাইসেন্স ছাড়া এআই প্রশিক্ষণে সাউন্ড রেকর্ডিং ব্যবহার অনৈতিক। তার মতে, মানব শিল্পীরাই নতুন সংগীত তৈরিতে সক্ষম, তবে প্রযুক্তি ব্যবহারের আগে সঠিক লাইসেন্সিং ও স্বচ্ছ নীতিমালা জরুরি।
এআই-নির্ভর গান নিয়ে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলোর মনোভাব ভিন্ন। স্পটিফাই জানায়, তারা এআই গানকে অগ্রাধিকার বা মুনাফা দেয় না, বরং কেবল লাইসেন্সপ্রাপ্ত তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমেই গান আপলোড হয়। অন্যদিকে ডিজার এ ধরনের গানের পাশে সতর্কবার্তা যোগ করেছে এবং জানিয়েছে, ২০২৫ সালের এপ্রিলে তাদের প্ল্যাটফর্মের ১৮% গানই ছিল এআই-নির্ভর। ইউটিউবও ঘোষণা দিয়েছে, ১৫ জুলাই থেকে এআই দিয়ে তৈরি যেকোনো কনটেন্ট থেকে মনিটাইজেশন বন্ধ থাকবে।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, এআই সংগীতে যেমন ঝুঁকি, তেমনি সুযোগও তৈরি করছে। সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করা হলে এটি সৃজনশীলতার পরিসর বাড়াতে পারে, কিন্তু কণ্ঠ নকল, স্বত্ব লঙ্ঘন বা সম্পূর্ণ কনটেন্ট তৈরি হলে তা শিল্পের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি হতে পারে।