কিংবদন্তি লালনশিল্পী ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন দেশের আরেক প্রখ্যাত শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেছেন, ফরিদা পারভীনের চলে যাওয়ার খবরটি তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না এবং তার চলে যাওয়ার বয়সও এখনো হয়নি। ফরিদা পারভীনকে একজন বিরল প্রতিভা হিসেবে আখ্যায়িত করে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, "এমন শিল্পী তো আর যুগে যুগে আসেন না।"

ফরিদা পারভীন লালনসংগীতকে বিশ্ব দরবারে নিয়ে গেছেন বলে উল্লেখ করে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, তিনি জাপানে লালনগীতিকে একটি ভিন্ন মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছেন। সাবিনা ইয়াসমিনের মতে, দেশে তাকে যোগ্য মূল্যায়ন করা হয়নি। তিনি বলেন, ফরিদা পারভীন লালনের আদি সুরগুলো সংগ্রহ করে সহজভাবে উপস্থাপন করেছেন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে লালনের ভাবতত্ত্ব ছড়িয়ে দিয়েছেন। এর তুলনা হয় না। তার এই অবদানের জন্যই তিনি ‘লালনকন্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।

সাবিনা ইয়াসমিন জানান, ফরিদা পারভীনের সঙ্গে তার খুবই ভালো সম্পর্ক ছিল। তিনি বলেন, “যখন তাঁর ফার্মগেটে বাসা ছিল, আমি নিজেই কয়েকবার গিয়েছি। তাঁর কাছে লালনসংগীত শিখেছি, লালন সম্পর্কে জেনেছি।” দু’জন একসঙ্গে দেশে-বিদেশে অনেক গান করেছেন। নিয়মিত দেখা না হলেও তাদের মধ্যে ফোনে যোগাযোগ ছিল। সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “গতকালও আল্লাহর কাছে অনেক দোয়া করেছি। বলেছি, আল্লাহ, ফরিদা পারভীনকে এই যাত্রায় আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দাও। হয়তো তাঁর যাওয়ার সময় হয়েছিল বলে আর ফিরলেন না।”

সাবিনা ইয়াসমিন আরও বলেন যে, যারা ফরিদা পারভীনকে কেবল লালনশিল্পী হিসেবে ভাবেন, তারা ভুল করেন। তার কণ্ঠে দেশাত্মবোধক গান, আধুনিক গান এবং নজরুলগীতিও ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। তিনি উদাহরণ হিসেবে ‘তোমরা ভুলে গেছো মল্লিকাদির নাম’ এবং ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’ গানগুলোর কথা উল্লেখ করেন, যা তার কণ্ঠে আলাদা মাত্রা পেয়েছে।