গল্পটা এক নারী আইকনের—ম্যাডোনা। যাঁর নামেই চোখে ভেসে ওঠে আলো, উন্মাদনা, বিদ্রোহ, আর সাহস। যিনি শুধুই একজন গায়িকা নন, বরং পপসংগীতের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী নাম। সেই নারীর জীবনকে ঘিরেই শুরু হয়েছিল একটি বায়োপিকের স্বপ্ন, যার যাত্রা শুরু ২০২২ সালে।
তখনই নেটফ্লিক্স ঘোষণা দিয়েছিল—ম্যাডোনার চরিত্রে দেখা যাবে ‘ইনভেন্টিং আন্না’ খ্যাত জুলিয়া গার্নারকে। তবে এই চরিত্রের জন্য লড়াই সহজ ছিল না। গার্নারকে অডিশনে নাচতে হয়েছিল স্বয়ং ম্যাডোনার সামনেই! পরবর্তীতে সেই মুহূর্ত স্মরণ করে গার্নার বলেন, “আমি নিজেকে প্রশ্ন করলাম, ম্যাডোনা হলে কী করত? উত্তর ছিল—এই জায়গাটা তার প্রাপ্য। আমিও তেমনি ভেবেছি।”

কিন্তু এরপর হঠাৎ থেমে যায় সবকিছু। প্রজেক্ট নিয়ে পড়ে যায় দীর্ঘ নীরবতা। ২০২৩ সালে জানা যায়, ইউনিভার্সাল প্রাথমিক পর্যায় থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। এর মাঝে শোনা যায় নানা গুঞ্জন, দেখা যায় অনিশ্চয়তা।
তবে এর মাঝেও চলতে থাকে এক ভিন্ন গল্প—গার্নার ও ম্যাডোনার মধ্যকার বন্ধুত্ব। কখনও জন্মদিনের পার্টিতে, কখনও কনসার্টে—দু’জনকে দেখা গেছে একসঙ্গে, এবং এ বন্ধনের সূত্রেই হয়তো আবার নতুন করে প্রাণ পায় প্রকল্পটি।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে ম্যাডোনা নিজেই জানালেন, তিনি আবারও নিজের বায়োপিকের চিত্রনাট্য লিখতে শুরু করেছেন। সম্ভাব্য শিরোনাম উঠে আসে তাঁরই জনপ্রিয় গান থেকে—‘হু’স দ্যাট গার্ল – ১৯৮৭’।

আর চূড়ান্ত চমক আসে ২০২৫ সালের মে মাসে। মার্কিন গণমাধ্যম ডেডলাইন জানায়, ম্যাডোনার জীবনকাহিনি আর সিনেমা নয়, এবার হচ্ছে নেটফ্লিক্সে একটি লিমিটেড সিরিজ। পরিচালনায় থাকছেন ‘ডেডপুল অ্যান্ড উলভারিন’ খ্যাত জনপ্রিয় নির্মাতা শন লেভি।

তাহলে কি এবার সত্যি সত্যিই আসছে সেই বহু প্রতীক্ষিত আত্মজীবনী? এক পডকাস্টে গার্নার বলেন, “এটা এখনও হচ্ছে।” তাঁর কণ্ঠে ছিল দৃঢ়তা, মুখে ভরসা, চোখেমুখে সাহসের ছাপ—যা যেন ম্যাডোনারই প্রতিবিম্ব।

সবশেষে একটাই কথা বলা যায়—পপকুইনের গল্প থেমে নেই। কীভাবে ও কোথায় আসবে, সেটি এখনও রহস্য, তবে এইটুকু নিশ্চিত—ম্যাডোনার জীবনের নাটকীয় অধ্যায় এবার ধরা দেবে পর্দায়, কিংবা পর্দার আড়ালে। অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। শুরু হতে যাচ্ছে এক নতুন অধ্যায়—পপসংগীতের ইতিহাসে, আর বিশ্বসংস্কৃতির মননে।