অল্প বয়সে বিধবা হওয়া নারীদের সমাজে যে নানামুখী সমস্যা ও সমালোচনার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, সেই কঠিন গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সিনেমা 'পিঞ্জর'। রুদ্রজিৎ রায় পরিচালিত এই ছবিতে বিধবা নারীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী শতাক্ষী নন্দী।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে শতাক্ষী তার চরিত্র ও সমাজের গোঁড়ামি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, "বিধবাদের আজও নানা রকমের বাধার মুখে পড়তে হয়। নানা গোঁড়ামি রয়েছে তাদের নিয়ে। তাদের কামনা বাসনার প্রসঙ্গ এলে সেগুলো আরও প্রকট হয়। সেই বিষয়টিও রয়েছে এই সিনেমায়। চরিত্রটা কঠিন হলেও কাজটা ভালোভাবে করতে পেরিছি।"

শতাক্ষী জানান, বাস্তব জীবনে তিনি খুব অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়েছেন এবং মাকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তবে তার পরিবার কখনো মায়ের ওপর কোনো চাপিয়ে দেয়নি।

অভিনেত্রীর কথায়, "আমার মাকে কখনও বলা হয়নি বাইরে কোথাও যেও না, খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে কিছু প্রত্যাশা করো না অথবা বেশি উজ্জ্বল রঙের লিপস্টিক পরো না। এসব কোনও দিন দেখিনি। এ সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি, অনেকের সঙ্গে সময় কাটিয়ে বুঝেছি সমাজ যেন বিধবা নারীকে জোর করে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখে।"
তিনি আরও বলেন, "সমাজের চাপে কখনো কখনো একজন বিধবা নারী নিজেকে দোষী ভাবতে থাকেন। নিজের ভালোলাগা প্রাধান্য দিলে তারা হয়ে যান খারাপ নারী। এমনটি পোশাক ও খাওয়াদাওয়ার উপরেও পরোক্ষভাবে প্রভাব পড়ে। কিন্তু এমনটা কি হওয়ার কথা ছিল?"

পরিচালক রুদ্রজিৎ রায় জানান, প্রত্যেকেই এক ধরনের খাঁচার মধ্যে থাকে। সেই খাঁচা থেকে বেরিয়ে নিজেকে নতুন করে খুঁজে পাওয়ার গল্প নিয়েই 'পিঞ্জর' নির্মিত।

তিনি বলেন, "বর্তমান যুগে নিজেকে নিজের পাশে দাঁড়াতে হয়। খাঁচা থেকে বেরিয়ে নিজের জায়গা তৈরি করে নেওয়া একটা লড়াই। কেউ সাহায্য করতে আসে না। শতাক্ষীর চরিত্রটাও তেমনই।"