ভারতের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বড়সড় রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাক্ষী হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন, দীর্ঘদিনের জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিরোধী শিবির তথা বিজেপি ত্যাগ করে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী পার্নো মিত্র। তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ সূত্র মারফত এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। আগামী শুক্রবার তৃণমূল ভবনে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি ঘাসফুল শিবিরের পতাকা হাতে তুলে নেবেন বলে জানা গেছে। নির্বাচনের ঠিক আগে পার্নোর এই দলবদলের কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও, টলিউডের একাংশ একে সময়োপযোগী ও ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হিসেবেই দেখছে। মূলত বিরোধী শিবিরের বর্তমান অস্পষ্ট অবস্থানের কারণেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

২০০৭ সালে রবি ওঝার ‘খেলা’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে ছোটপর্দায় ক্যারিয়ার শুরু করা পার্নো মিত্র পরবর্তীতে অঞ্জন দত্তের ‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’ ছবির মাধ্যমে বড়পর্দায় পা রাখেন। এরপর ‘রাজকাহিনী’, ‘অপুর পাঁচালি’ বা ‘বেডরুম’-এর মতো অসংখ্য সফল ছবিতে অভিনয় করে তিনি দর্শক মহলে নিজের শক্ত জায়গা তৈরি করেছেন। বিনোদন জগতের এই সফল যাত্রার মাঝেই ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে পা রাখেন তিনি। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বরাহনগর কেন্দ্র থেকে পদ্ম শিবিরের প্রার্থী হিসেবে লড়াই করলেও তৃণমূলের তাপস রায়ের কাছে তাঁকে পরাজিত হতে হয়।

পার্নো মিত্রের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে বিতর্ক অবশ্য নতুন নয়। গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের সঙ্গে দোলযাত্রার ‘নৌকাবিহার’ অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতি রাজনীতি ও অভিনয়, উভয় জগতেই ব্যাপক শোরগোল ফেলেছিল। সেই সময় বিরোধী শিবিরের প্রবীণ নেতা তথাগত রায়ও তাঁর এই আচরণ নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছিলেন। এবার সেই বিতর্কিত অধ্যায় পেছনে ফেলে সরাসরি শাসকদলে যোগ দিয়ে পার্নো তাঁর রাজনৈতিক জীবনের নতুন ইনিংস শুরু করতে চলেছেন।