জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ বর্তমানে অভিনয়, ট্রাভেল ভ্লগিং এবং প্রযোজনার মতো নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সম্প্রতি তিনি কক্সবাজার সমুদ্রতীরে ছিলেন, যেখানে ৩২ পর্বের একটি ভ্লগিং শোর কাজ হয়েছে, যার ৮টি পর্বে তিনি উপস্থাপনায় আছেন। ‘এমন কক্সবাজার আগে দেখেছেন কি?’ নামের এই শো’র মাধ্যমে তাঁর প্রথম ট্রাভেল ভ্লগিং অভিজ্ঞতা হয়েছে। হাসিমুখে তিনি জানান, “বাইরে শুটিং মানেই আমার কাছে পিকনিক! এবার তো নন-ফিকশন ভ্লগিং আরও মজা। নতুন নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছি।”
নতুন মাধ্যম ও স্বপ্ন
ট্রাভেল ভ্লগিংয়ের প্রতি তাঁর টান নতুন নয়; বছর দুয়েক আগে ‘নাদির অন দ্য গো’ ভ্লগ দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হন। তিনি ভবিষ্যতে ট্রেকিং, অপরিচিত প্রাকৃতিক স্থান এবং কম দেখা অঞ্চল নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা করছেন।
এছাড়াও তিনি পডকাস্টের জগতেও আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাঁর মতে, পডকাস্টে মানুষ নিজের কথা, অভ্যাস এবং মানসিক যাত্রাও তুলে ধরতে পারে, যা দেশের প্রচলিত ইন্টারভিউ ফরম্যাটের চেয়ে ভিন্ন।
২০১০ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার হয়ে আলোচনায় আসা মৌসুমী একসময় ক্যামেরার পেছনের প্রতিও আগ্রহ দেখান। বর্তমানে তাঁর পরিকল্পনা ফিকশন নয়, আগে নন-ফিকশন দিয়ে পরিচালনাতে হাত পাকানো। অভিনয়ের ফাঁকে তিনি ঢাকার নিকেতনে চারজন সহকর্মী বন্ধুর সঙ্গে মিলে একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানও শুরু করেছেন।
দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ ‘যাপিত জীবন’
সিনেমার দিক থেকেও মৌসুমী হামিদের যাত্রা উল্লেখযোগ্য। ‘জালালের গল্প’, ‘নয়া মানুষ’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। সামনে শুরু হবে নতুন একটি সিনেমার শুটিং।
মুক্তির অপেক্ষায় আছে তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘যাপিত জীবন’, যা নিয়ে তাঁর উৎসাহের কমতি নেই। সেলিনা হোসেনের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এবং হাবিবুল ইসলাম হাবিব পরিচালিত এই সরকারি অনুদানের সিনেমাটিতে অভিনয়ের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্ন পূরণ হয়েছে বলে জানান মৌসুমী।
তিনি বলেন, “আফজাল হোসেনের সঙ্গে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর ইচ্ছে আমার অনেক পুরোনো। আমার মা- বাবাও তাঁকে ভীষণ পছন্দ করেন। এত বছরে নানা কাজ করলেও তাঁর সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করার সুযোগ পাচ্ছিলাম না। এ সিনেমাটি সেই অপ্রাপ্তিটা মিটিয়ে দিয়েছে।” তিনি আফজাল হোসেনের ব্যক্তিত্ব আর ব্যবহার থেকেও শেখার মতো অনেক কিছু আছে বলে জানান।
অভিনেত্রী মনে করেন, ‘যাপিত জীবন’ মূলত ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে লেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস এবং গল্পের মানবিক স্রোত তাকে সবচেয়ে বেশি স্পর্শ করেছে। “সেলিনা হোসেনের লেখার শক্তিটা ধরে রেখে সিনেমা তৈরি হচ্ছে এটা ভেবে কাজটির প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। ছবিটা নিয়ে আমার ভরসা অনেক, বিশেষ করে আফজাল ভাইয়ের সঙ্গে পর্দায় কেমন লাগবে সেটা দেখার অপেক্ষা করছি।”