মারিয়া হোসেন শান্ত। মডেলিং দিয়ে শোবিজে পথচলা শুরু, পরে অভিনয়ে নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন। এখন দুটো ক্ষেত্রেই ব্যস্ততা সামলাচ্ছেন সমান আগ্রহে। সম্প্রতি কালবেলার তারাবেলা অনুষ্ঠানে নিজের জীবন, বেড়ে ওঠা আর কাজ সব মিলিয়ে অনেক গল্প শেয়ার করেছেন তিনি।

ছোটবেলায় তিনি ছিলেন খুব চুপচাপ, প্রায় বোবা স্বভাবের। দুষ্টুমি করতেন না, খেলাধুলাও নয়। গ্রামে গেলে কাজিনরা তাকে ঠিক মতো খেলায় নিতও না। কেউ কিছু বললেই আম্মার কাছে ছুটে যেতেন। তার বর্তমান প্রাণবন্ত ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সেই সময়ের শান্তার মেলবন্ধনই যেন মজার বৈপরীত্য।

স্কুলজীবনের স্মৃতি তার কাছে সবচেয়ে সুন্দর। পড়ালেখা, বন্ধুদের আড্ডা সব মিলিয়ে একেবারে উপভোগের সময় ছিল সেটা। তখন কিছুই সিরিয়াস লাগত না, কিন্তু আজ সেই দিনগুলোই তাকে সবচেয়ে বেশি টানে। প্রেমের অভিজ্ঞতাও ছিল স্কুলের বাইরের। এলাকার এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে দুই-আড়াই বছরের সম্পর্ক ছিল, আর স্কুলজীবনে প্রস্তাব পেয়েও কেউ সরাসরি বলতে সাহস পায়নি, কারণ তার পেছনে নাকি এলাকার বড় ভাইদের নজর ছিল এসএসসি শেষে সে কথাটা জানতে পেরে বেশ মজা পেয়েছিলেন তিনি।

এরপর প্রেম জীবনে আর কেউ আসেনি। ছয় বছর পর একজনকে ভালোলাগা তৈরি হয়েছিল, দুজনেই সেটা জানতেন, কিন্তু মিল না হওয়ায় সম্পর্ক শুরু হওয়ার আগেই দুজন সরে আসেন। এখন তিনি সিঙ্গেল, আর সম্পর্ক নিয়ে তেমন কোনো ভাবনা নেই। পড়ালেখাও চালিয়ে যাচ্ছেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

শোবিজে আসার শুরুটাও ছিল হঠাৎ। কোনো পরিকল্পনা বা প্রস্তুতি ছাড়াই তিন বছর আগে মডেলিং শুরু করেন। চারপাশের মানুষ যখন বলল অভিনয়েও হাত দেওয়া উচিত, তখনই ভাবলেন চেষ্টা করে দেখবেন। প্রথম অভিনয়ের পরই বুঝলেন এটাই তার জায়গা, এখানেই মানসিক শান্তি পান। তাই অভিনয়কে কেন্দ্র করেই এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

পরিবারের সবাই প্রথমে তাকে সমর্থন করেনি। বিশেষ করে চাচারা চাইতেন লেখাপড়া আগে শেষ হোক। কিন্তু ধীরে ধীরে তার কাজ দেখে তারা মত বদলান। এখন পরিবার তাকে নিয়ে খুশি। আর শুরু থেকেই যে মানুষটি পাশে ছিলেন, তিনি তার মা। জীবনের সব ক্ষেত্রেই মায়ের অবদানকে সবচেয়ে বড় বলে মনে করেন শান্ত।

অভিনয়ের পাশাপাশি তার স্বপ্ন আছে সিনেমাতেও কাজ করার। তবে সে স্বপ্নটা বাস্তবায়নের আগে নিজেকে আরও প্রস্তুত করতে চান। এখন তার লক্ষ্য নিয়মিত কাজ করে নিজেকে আরও শক্ত করে দাঁড় করানো।