অস্কারজয়ী অভিনেত্রী কেট উইন্সলেট সম্প্রতি দ্য সানডে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হলিউডে নারীদের প্লাস্টিক সার্জারির ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতার কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি মনে করেন, তরুণ অভিনয়শিল্পীরা ইনস্টাগ্রামে আরও বেশি লাইক পাওয়ার জন্য নিখুঁত হওয়ার পেছনে অন্ধভাবে দৌড়াচ্ছেন, যা গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।

দ্য সানডে টাইমসকে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে কেট উইন্সলেট বলেন, "কারও আত্মসম্মান যদি পুরোপুরি নিজের চেহারার ওপর নির্ভর করে, সেটা ভয়ের ব্যাপার।" তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন, "তাঁরা কি জানেন, নিজেদের শরীরে ঠিক কী ঢুকিয়ে দিচ্ছেন? নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি এই অবহেলা ভয় ধরিয়ে দেয় ওটা একদম চরম বিশৃঙ্খলা।" উইন্সলেট বিচলিত যে, প্লাস্টিক সার্জারির এই প্রবণতা শুধু অভিনেত্রীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, সাধারণ নারীরাও বোটক্স বা ঠোঁটে ফিলার নেওয়ার জন্য টাকা জমাচ্ছেন। তিনি বলেন, "আমার সবচেয়ে ভালো লাগে যখন আমার বয়স বোঝা যায় যা সবচেয়ে কষ্ট দেয় তরুণীরা জানেই না আসলে সৌন্দর্য বলতে কী বোঝায়।"

এই প্রসঙ্গে কেট উইন্সলেট স্মরণ করেন ‘টাইটানিক’-এর সাফল্যের পর কীভাবে তাঁকে নিষ্ঠুর বডি-শেমিংয়ের মুখে পড়তে হয়েছিল। একসময় রেড কার্পেটে তাঁর পোশাক নিয়ে উপস্থাপক বলেছিলেন, "তাঁকে নাকি গলে পড়ে যাওয়া কারও মতো লাগছে।" কেট বলেন, "এটা ভীষণ জঘন্য।" তিনি একসময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি গিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন, কারণ তিনি মনে করেন শুধু তাঁর জন্য নয়, বরং যেসব মানুষ এমন নির্যাতনের শিকার হয়, তাদের সবার পক্ষ থেকে এটা বলা দরকার ছিল।

‘টাইটানিক’-এর পর সিনেমার শেষ দৃশ্য নিয়েও তাঁকে বিদ্রূপ করা হতো। কেট জানান, মানুষ বলত, "রোজ নাকি এত মোটা ছিল যে জ্যাক দরজার ওপর উঠতে পারেনি।" কেট উইন্সলেটের কথায়, "আমি নাকি খুব মোটা ছিলাম! মানুষ এত নিষ্ঠুর ছিল কেন? আমি মোটেও মোটা ছিলাম না। আমি তখন তরুণী, শরীর বদলাচ্ছে, নিজের অস্তিত্ব নিয়ে অনিশ্চিত, ভীষণ ভীত এ অবস্থায় তারা আরও কঠিন করে তুলেছিল সবকিছু। এটা নিছকই বুলিং এবং সত্যি বলতে সীমা ছাড়ানো নির্যাতন।"