দুই বছর আগে ঘটে যাওয়া শুটিংবাড়ির বিস্ফোরণে শারমিন আঁখির দুই হাত ও শরীরের বড় অংশ দগ্ধ হয়। সেই সময় থেকেই তার অভিনয় জীবনে বিরতি আসে। দীর্ঘ চিকিৎসা ও ফিজিওথেরাপির পর অবশেষে সুস্থ হয়ে আবার ক্যামেরার সামনে ফিরে এসেছেন অভিনেত্রী। শারমিন বলেন, “শরীরের অবস্থা এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো। এখন আর অসুস্থতা নিয়ে ভাবি না। ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।”

শুটিংয়ে ফিরে আসার সময় এখনও হাতে ও শরীরে দাগ রয়ে গেছে। কিছু জায়গা সাদা, কিছু কালো, যা প্রাকৃতিকভাবে যেতে আরও অনেক সময় লাগবে। সার্জারির জন্যও এখনো প্রস্তুত নন। তবে তিনি বলছেন, “এই দাগ আমার বাধা নয়, বরং সাহস দেয়। শুটিংয়ে যাই, মেকআপ নিই এবং সময়মতো পৌঁছে কাজ করি, যাতে নির্মাতার কোনো ক্ষতি না হয়।”

সম্প্রতি বঙ্গতে মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত ‘ফাইভ গো ওয়াইল্ড’। এই কাজটি শারমিনের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে চ্যালেঞ্জিং ছিল। বিশেষ করে একটি আইটেম গানের জন্য ১০ দিন আগে থেকে রিহার্সাল করতে হয়েছে। শারমিন বলেন, “হঠাৎ দীর্ঘ বিরতির পর এত বড় চাপ নিতে পারব কি না, তা ভাবছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছি, এটা আমার জন্য বড় পাওয়া।”‘

পিরিত কাঁডলের আডা’ আইটেম গান নিয়ে সমালোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, “চরিত্রের প্রয়োজনে সব ধরনের কাজই করতে হয়। সমালোচনা হবে, তবে কাজ চালিয়ে যাওয়া আমার দায়িত্ব। আলাদা উপস্থাপনার কারণে গানটি দর্শকের নজর কেড়েছে।”

নিজের স্বামী ও পরিচালক রাহাত কবিরের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে শারমিন জানান, “আমরা একসেটে থাকলে শতভাগ পেশাদার থাকি। স্বামী পরিচালক হওয়ায় কোনো বাড়তি স্বাধীনতা বা সুবিধা নেই, বরং দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়।”

দূর্ঘটনার কারণে ক্যারিয়ার যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল, তা নিয়ে তিনি বলেন, “আমি কখনো ভাবি না দুর্ঘটনা না হলে কোথায় থাকতাম। বরং যেভাবে আছি, ভালো আছি। দীর্ঘ এক যুগের বেশি ক্যারিয়ারে চাওয়া-পাওয়ার আর নতুন কিছু নেই। যতদিন সুস্থ থাকব, কাজ করব।”

শারমিন আঁখি নতুন কাজ ও চরিত্রের অপেক্ষায় আছেন। তিনি বলেন, “নির্মাতারা আমাকে নিয়ে আলাদা ভাবেননি, তবে ভালো গল্প ও চরিত্রের জন্য আমি সব সময় প্রস্তুত। যে ডাকবে, তার কাজেই অভিনয় করব।”

শারমিনের এই প্রত্যাবর্তন এবং সাহসিকতা দেখাচ্ছে, শারীরিক আঘাত ও বিপর্যয়ের পরও মনোবল ও পেশাদারিত্ব ধরে রাখা সম্ভব। তাঁর দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রম পরবর্তী প্রজেক্টগুলোতে দর্শকদের আনন্দ দিতে থাকবে।