অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’-এর ট্রেলার প্রকাশ, দর্শক মাতাল আগুনের নাভি গোত্রে
প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৫ | বিনোদন ডেস্ক
জেমস ক্যামেরন আবারও প্রমাণ করলেন কেন তিনি আধুনিক হলিউডের অন্যতম সফল নির্মাতা। সদ্য প্রকাশিত হয়েছে ‘অ্যাভাটার’ সিরিজের তৃতীয় কিস্তি ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’-এর প্রথম অফিসিয়াল ট্রেলার। অনুরাগীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে এই ট্রেলার যেন একসাথে বিস্ময়, উত্তেজনা ও রহস্য ছড়িয়ে দিয়েছে। ট্রেলারে ফিরে এসেছে প্যান্ডোরার অপরূপ সৌন্দর্য ।
ছবি- অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ এর ট্রেইলার থেকে নেয়া
এই কিস্তিতে সবচেয়ে আলোচিত সংযোজন হলো ‘মাংকওয়ান’ নামের এক নতুন নাভি গোত্র, যাদেরকে ‘অ্যাশ পিপল’ নামেও ডাকা হচ্ছে। আগুনে পোড়া ভূমি, ছাইয়ের ঢেকে থাকা বনভূমি আর আগ্নেয়গিরির ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তাদের বাস। আগের দুই ছবিতে দেখা ওমাটিকায়া (বনাঞ্চল) ও মেটকায়িনা (সামুদ্রিক) গোত্রের একেবারে বিপরীত এই জনপদ।
ছবি- অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ এর ট্রেইলার থেকে নেয়া
নতুন এই গোত্রের নেতৃত্বে রয়েছে ভ্যারাং (অভিনয়ে: ওনা চ্যাপলিন)। আগুনের প্রতি তার অদ্ভুত প্রতিরোধশক্তি ও শারীরিক নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা ট্রেলারে দেখেই দর্শকরা বিস্ময়ে ভাসছেন। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে তুলনা করেছেন জনপ্রিয় সিরিজ ‘অ্যাভাটার: দ্য লাস্ট এয়ারবেন্ডার’-এর ‘ফায়ারবেন্ডার’ চরিত্রদের সঙ্গে।
ট্রেলারে মাংকওয়ান গোত্রকে মূল চরিত্র জেক সুলি (স্যাম ওয়ার্থিংটন) ও নেইটিরি (জো সালদানা)-এর বিপক্ষে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এছাড়াও ফিরে এসেছে আগের ছবির ভিলেন মাইলস কোয়ারিচ (স্টিফেন ল্যাং)। ধারণা করা হচ্ছে,কোয়ারিচ ও অ্যাশ পিপলের মধ্যে জোট গঠিত হতে পারে — যা প্যান্ডোরার ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট করে দেবে।
এই কাহিনির ভিতর দিয়ে প্যান্ডোরার রাজনৈতিক ও সামাজিক জটিলতা আরও গভীরভাবে তুলে ধরা হবে বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। যেখানে শুধু নাভিদের মধ্যকার ঐক্য নয়, বরং বিশ্বাসঘাতকতা ও আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।ছবি-জেমস ক্যামেরন
জেমস ক্যামেরন বরাবরের মতো এবারও নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে দর্শকদের জন্য তৈরি করেছেন এক নতুন ভিজ্যুয়াল দুনিয়া। আগ্নেয় পাহাড়ের পটভূমি, আগুনে মোড়া গুহা, আকাশে ভাসমান প্রাণী ও ধ্বংসের মধ্যেও সৃজনশীলতা— সব মিলিয়ে এই ছবি চোখ ধাঁধানো এক অভিজ্ঞতা হয়ে উঠবে বলেই প্রত্যাশা।
সাথে আছে আগের সিনেমার তুলকুন (তিমি সদৃশ প্রাণী) এবং নতুন কিছু অজানা প্রাণী, যা দর্শকদের আবিষ্কারের আনন্দ দেবে।
‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’ মুক্তি পাচ্ছে ২০২৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর।
এটি হবে ‘অ্যাভাটার’ ফ্র্যাঞ্চাইজির তৃতীয় ছবি। ২০০৯ সালে প্রথম ‘অ্যাভাটার’ মুক্তির পর বিশ্বজুড়ে বিপুল সাড়া পড়ে যায়। ২০২২ সালে মুক্তি পায় দ্বিতীয় কিস্তি ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’, যা সমুদ্রজগৎ নিয়ে আবর্তিত ছিল। এবার আগুনের গল্প নিয়ে ফিরছে প্যান্ডোরা।
অ্যাভাটার সিরিজের তৃতীয় কিস্তি ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’-এর প্রথম ট্রেলার প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বজুড়ে অনুরাগীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে চরম উত্তেজনা। জেমস ক্যামেরনের এই নতুন অধ্যায় দর্শকদের ফিরিয়ে নিয়ে গেছে প্যান্ডোরার অপরূপ জগতে, তবে এবার তা আগুন, ছাই আর ধ্বংসের প্রতিচ্ছবিতে ভরপুর। নতুন এই কিস্তিতে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে এক ভয়ংকর ও ভিন্নধর্মী নাভি গোত্র — মাংকওয়ান, যাদের বাস আগ্নেয়গিরির ধ্বংসাবশেষে ছাইঢাকা ভূমিতে। আগের সবুজ বন বা নীল সমুদ্রপৃষ্ঠের বিপরীতে মাংকওয়ানরা যেন এক আগুনে সভ্যতার প্রতিচ্ছবি।
এই গোত্রের নেতৃত্বে রয়েছে ভ্যারাং (ওনা চ্যাপলিন), এক রহস্যময় চরিত্র যার শরীর থেকে আগুন বের হওয়ার ক্ষমতা আছে। ট্রেলারে দেখা গেছে, তার হাতে আগুন জ্বলে উঠছে — যা দেখে অনেকেই তাকে ‘ফায়ারবেন্ডার’ বলে তুলনা করছেন জনপ্রিয় অ্যানিমে চরিত্রের সঙ্গে। মাংকওয়ানদের অবস্থান স্পষ্টতই জেক সুলি ও নেইটিরির বিপরীতে। তাদের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে আগের ছবির খলনায়ক মাইলস কোয়ারিচও। সব মিলিয়ে এবার প্যান্ডোরার রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা হয়ে উঠছে আরও জটিল ও উত্তপ্ত।
ভিজ্যুয়াল দিক থেকে ছবিটি আবারও চমকে দিয়েছে দর্শকদের। আগ্নেয় পরিবেশ, উড়ন্ত প্রাণী, আগুনে মোড়া গুহা এবং প্রযুক্তির এক অনন্য মিশেল যেন চোখে বিস্ময়ের ঝলকানি ছড়ায়। আগের সিনেমার মতো এবারও রয়েছে তুলকুন প্রজাতির প্রাণী ও আরও নতুন কিছু চরিত্র। প্যান্ডোরার এই নতুন অধ্যায়ে শুধু যুদ্ধ নয়, উঠে আসবে পারিবারিক সম্পর্ক, বিশ্বাসঘাতকতা, ও সংস্কৃতিগত সংঘাতের গল্পও।
ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে ২০২৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর। অ্যাভাটার ভক্তদের জন্য এটি কেবল একটি সিনেমা নয়, বরং এক আবেগময় ও ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা যা আবারও সিনেমা ইতিহাসে দাগ কাটবে বলে মনে করছেন সমালোচকরা।