বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও সাবেক বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন আজ ৫১ পেরিয়ে ৫২ বছরে পা দিলেন। সৌন্দর্য, মাধুর্য আর আত্মবিশ্বাস দিয়ে তিনি যেন প্রমাণ করেছেন যে, সত্যিকারের দীপ্তি কখনো ম্লান হয় না। তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, তার বয়স নির্দিষ্ট একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে। এখনো তিনি নব্বই দশকের সেই হম্বিতম্বি তরুণী ঐশ্বরিয়া রাইয়ের মতোই অনুপ্রেরণাদায়ী আইকোনিক।অভিনেত্রীর জন্মদিনে সামাজিক মাধ্যমে শুভেচ্ছার বন্যা বইছে, ভক্তরা বলছেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন, সময় তোমার কাছে হার মানিয়েছে।
অভিনয় জগতে পথচলা
স্থপতি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বড় হলেও ভাগ্য তাকে নিয়ে আসে অভিনয় জগতে। ১৯৯৪ সালে মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব জয় করার পর তার তারকাখ্যাতির পথচলা শুরু হয়।
অভিষেক: ১৯৯৭ সালে তামিল নির্মাতা মণিরত্নমের 'ইরুভার' সিনেমার মাধ্যমে বড়পর্দায় অভিষেক হয় তার। একই বছর বলিউডে আত্মপ্রকাশ ঘটে 'ওর পেয়ার হো গয়া' সিনেমার মাধ্যমে।
সফলতা: ১৯৯৯ সালে সঞ্জয় লীলা বনশালির 'হাম দিল দে চুকে সনম' তাকে বলিউডের প্রথম সারিতে পৌঁছে দেয়। এরপর 'তাল', 'দেবদাস', 'জোধা আকবর', 'গুরু', 'ধূম ২', 'রেইনকোট'-এর মতো সিনেমায় তিনি তার অভিনয় নৈপুণ্য প্রমাণ করেন। বিশেষ করে 'দেবদাস'-এ 'পারো' চরিত্রে তার অনবদ্য অভিনয় আজও দর্শকদের হৃদয়ে দাগ কেটে আছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গন: দক্ষিণী-বলিউডের সীমা ছাড়িয়ে 'ব্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস' এবং 'দ্য পিঙ্ক প্যান্থার ২'-এর মতো হলিউড প্রজেক্টে কাজ করে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রতিষ্ঠা পান। কান চলচ্চিত্র উৎসবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে আসছেন, যা এখন এক ঐতিহ্যের প্রতীক।
পারিবারিক জীবন ও প্রত্যাবর্তন
২০০৭ সালে ঐশ্বরিয়া বিয়ে করেন বলিউড তারকা অভিষেক বচ্চনকে এবং কিংবদন্তি অমিতাভ বচ্চনের পুত্রবধূ হিসেবে তিনি বলিউডের অন্যতম সম্মানজনক পরিবারে যুক্ত হন। ২০১১ সালে জন্ম নেয় তাদের কন্যা আরাধ্যা বচ্চন। সংসার, মাতৃত্ব ও ক্যারিয়ার সবকিছুই তিনি সমান দক্ষতায় সামলাচ্ছেন।
মাতৃত্বের পর কিছু দিন বিরতি নিলেও ঐশ্বরিয়া ফিরে এসেছেন আরও উজ্জ্বল রূপে। 'জজবা', 'সর্বজিত', 'অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল' এবং সাম্প্রতিক মণিরত্নমের ব্লকবাস্টার দক্ষিণী সিরিজ 'পোন্নিয়িন সেলভান'-এ 'নন্দিনী' চরিত্রে তার উজ্জ্বল উপস্থিতি প্রমাণ করেছে অভিনয়ে তিনি আগের মতোই অনবদ্য।
জীবন্ত প্রতিমূর্তি
ঐশ্বরিয়া লরিয়েল প্যারিসের গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর হিসেবেও পরিচিত। পাশাপাশি তার প্রতিষ্ঠিত 'ঐশ্বরিয়া রাই ফাউন্ডেশন' দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ও অসহায় শিশুদের নিয়ে কাজ করছে।
তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, সৌন্দর্য মানে নিখুঁত হওয়া নয়, বরং নিজের অসম্পূর্ণতাকেও ভালোবাসা। এই দৃষ্টিভঙ্গিই তাকে আলাদা করেছে। তার চোখে মুগ্ধতা, কথায় সংযম, আর আচরণে অনুগ্রহ সব মিলিয়ে তিনি সৌন্দর্যের এক জীবন্ত প্রতিমূর্তি।