শুক্রবার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে বলিউডের আলোচিত সিনেমা ‘হক’। আদালতকেন্দ্রিক এই সামাজিক ড্রামার গল্প তৈরি হয়েছে ভারতের ইতিহাসে আলোচিত শাহ বানু মামলা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে। সিনেমাটি সমাজ ও আইন ব্যবস্থার ভেতর দিয়ে মানবিকতার গভীর এক বার্তা তুলে ধরেছে। এখানে শাহ বানুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইয়ামি গৌতম, আর তাঁর স্বামী আব্বাস খানের ভূমিকায় দেখা গেছে ইমরান হাশমিকে। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন রেসু নাথ।

সিনেমা মুক্তির আগে বলিউড হাঙ্গামাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইয়ামি জানান, ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয় করলেও বাড়তি কোনো চাপ অনুভব করেননি। তাঁর মতে, প্রতিটি চরিত্রের জন্য আলাদা প্রস্তুতি নিতে হয়, কিন্তু চাপ নিয়ে অভিনয় করলে চরিত্রে প্রাণ আসে না। এই সিনেমায় প্রথমবার ইমরান হাশমির বিপরীতে কাজ করেছেন ইয়ামি। তিনি বলেন, ইমরান দারুণ অভিনেতা এবং সহকর্মী হিসেবে ভীষণ সহযোগী। সেটে তাঁরা সংলাপ ও দৃশ্য নিয়ে আলোচনা করতেন, যাতে কাজটা আরও জীবন্ত হয়। সহশিল্পী সাহেবা চাড্ডা ও অসিমের প্রশংসাও করেন তিনি, যারা সিনেমায় তাঁর উকিলের চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

চরিত্রে প্রস্তুতি প্রসঙ্গে ইয়ামি বলেন, গল্প শোনার পর তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করেন। স্বামী পরামর্শ দেন বেশি কথা বলার অভ্যাস করতে, কারণ এই চরিত্রে সংলাপ অনেক। সেই পরামর্শেই তিনি অনুশীলন করেন এবং পরে অডিশন দিয়ে নির্বাচিত হন। বিভিন্ন ঘরানায় কাজ করলেও ইয়ামির কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গল্প। তিনি বলেন, গল্প ভালো না হলে প্রডাকশন যত বড়ই হোক, অভিনয়ে তৃপ্তি আসে না। এরপর তিনি প্রডাকশন, নির্মাতা ও সহশিল্পীদের বিচার করেন, সব মিললে তবেই কাজ করেন।

নিজের প্রিয় সিনেমা নিয়ে প্রশ্নে ইয়ামি বলেন, তিনি প্রতিটি কাজকেই ভালোবাসেন, কারণ যেটি ভালো না লাগে সেটিতে তিনি অংশই নেন না। চুক্তির আগে তিনি সবসময় গল্প পড়তে সময় দেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি জানান, ‘আর্টিকেল ৩৭০’-এর স্ক্রিপ্ট তিনি পঁয়ত্রিশবার পড়েছিলেন, কারণ গল্প না বুঝলে চরিত্রের গভীরে যাওয়া সম্ভব নয়।

স্বামী ও নির্মাতা আদিত্য সুহাস জাম ভালের পরামর্শ তাঁর ক্যারিয়ারে বিশেষ ভূমিকা রাখে বলে জানান ইয়ামি। তাঁর মতে, আদিত্য গল্প বুঝে তবেই কাজ শুরু করেন, যা তাঁকেও অনুপ্রাণিত করে। নতুন কোনো কাজে নামার আগে তিনি স্বামীর শেখানো এক কথাই মনে রাখেন, “আগে গল্পটা বোঝো, তারপর অভিনয় করো।”

‘হক’ সিনেমা নিয়ে ইয়ামির প্রত্যাশা একটাই  দর্শকের ভালোবাসা। তাঁর ভাষায়, “দর্শক যদি সিনেমাটিকে ভালোবাসেন, সেটাই আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য।”