প্রভু দেবা পরিচালিত ‘ওয়ান্টেড’ ছিল সালমান খানের ক্যারিয়ারের সেই টার্নিং পয়েন্ট, যেখান থেকে শুরু হয় তার দ্বিতীয় ইনিংস। টানা ব্যর্থতার পর ২০০৯ সালের এই ছবিই তাকে আবার বক্স অফিসের কেন্দ্রে ফিরিয়ে আনে এবং পুরো ২০১০-এর দশকজুড়ে একজন নির্ভরযোগ্য মাস অ্যাকশন স্টারে পরিণত করে। আজ ‘ওয়ান্টেড’ একটি কাল্ট ক্লাসিক এর স্টাইলিশ অ্যাকশন আর আয়েশা টাকিয়ার সঙ্গে অপ্রত্যাশিত, কিন্তু সতেজ জুটির জন্য ছবিটি আলাদাভাবে মনে রাখা হয়। তবে প্রযোজক বনি কাপুর সম্প্রতি জানিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত যে আয়েশাকে দর্শক দেখেছেন, তিনি প্রায় ছবির অংশই হননি।
বনি কাপুর জানান, ‘ওয়ান্টেড’ মূলত ২০০৬ সালের তেলেগু সুপারহিট ‘পোকিরি’-র হিন্দি রিমেক। ছবিটি দেখার পরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, রাধে ওরফে রাজবীর শেখাওয়াত চরিত্রের জন্য সালমানই সেরা পছন্দ। কিন্তু তখন সালমানের ব্যস্ততার কারণে তিনি প্রিভিউ শো দেখতে পারেননি। বনি স্মরণ করেন, তামিল রিমেক মুক্তি পেয়ে বড় হিট হয়ে গেলে হিন্দি স্বত্ব হারানোর আশঙ্কায় তিনি বেশ চাপে ছিলেন, ঠিক ‘গজনি’-র মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারত।
শেষ পর্যন্ত সালমান ‘পোকিরি’ দেখেন এবং রিমেকের জন্য সম্মতি দেন। পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রভু দেবাকে। নায়িকা নির্বাচন নিয়েই শুরু হয় আসল টানাপোড়েন। সালমান ছবিতে তার ঘনিষ্ঠ সহ-অভিনেত্রী ও তৎকালীন বান্ধবী ক্যাটরিনা কাইফকে কাস্ট করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বনি চেয়েছিলেন একেবারে নতুন জুটি। তার যুক্তি ছিল, গল্পে নায়িকার দ্বিধা ও দূরত্ব বিশ্বাসযোগ্য করতে হলে এমন কাউকে নেওয়া দরকার, যাকে আগে কখনও সালমানের বিপরীতে দেখা যায়নি। জেনেলিয়া ডি’সুজাসহ একাধিক নাম ঘোরানোর পর শেষ পর্যন্ত আয়েশা টাকিয়াকেই চূড়ান্ত করা হয়।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯-এ মুক্তি পাওয়া ‘ওয়ান্টেড’ সঙ্গে সঙ্গেই বড় হিটে পরিণত হয়। ভারতে ছবিটি ৬০ কোটির বেশি নেট আয় করে এবং বিশ্বজুড়ে প্রায় ১০০ কোটি রুপি গ্রস সংগ্রহ করে। কয়েক বছরের মধ্যে এটি ছিল সালমান খানের প্রথম নিরঙ্কুশ সাফল্য। এই ছবিই পরবর্তীতে ‘দাবাং’, ‘রেডি’ ও ‘বডিগার্ড’-এর মতো একের পর এক ব্লকবাস্টারের পথ তৈরি করে, যা তাকে আবারও বলিউডের শীর্ষ তারকাদের কাতারে দৃঢ়ভাবে বসিয়ে দেয়।