‘স্ত্রী’, ‘ভেড়িয়া’ কিংবা ‘মুনজ্যা’-Maddock Films-এর হরর-কমেডি ইউনিভার্স মানেই দর্শকদের টানটান উত্তেজনা। তাই এই ফ্র্যাঞ্চাইজির নতুন সংযোজন ‘থামা’ নিয়ে ভক্তদের প্রত্যাশা ছিল আকাশচুম্বী।

বিশেষ করে যখন পর্দায় Ayushmann Khurrana, Rashmika Mandanna আর Nawazuddin Siddiqui-র মতো হেভিওয়েট তারকারা আছেন। কিন্তু সিনেমাটি দেখার পর দর্শকদের মনে একটাই প্রশ্ন-এটি কি হাসাতে পারল, নাকি ডরালো?

সিনেমার শুরুটা বেশ রাজকীয়। খ্রিষ্টপূর্ব ৩২৩ সালে Alexander the Great-এর ভারত অভিযানের সময় এক রক্তপিপাসু ‘বেতাল’ নেতা যক্ষাসনের হাতে তার পতন ঘটে। এই যক্ষাসনই হলো সিনেমার আসল ভিলেন। শত শত বছর ধরে সে বেঁচে আছে মানুষের রক্ত খেয়ে। ১৯৪০-এর দশকের উত্তাল স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ফরসা চামড়ার ব্রিটিশদের রক্ত ছিল তার প্রধান টার্গেট!

গল্পের হিরো আলোক গোয়েল (আয়ুষ্মান) একজন সাংবাদিক। বন্ধুদের সাথে জঙ্গলে ক্যাম্পিং করতে গিয়ে ভালুকের কবলে পড়েন তিনি। সেখানেই তার দেখা হয় হৃদস্পন্দনহীন এক রহস্যময়ী তরুণী তাড়াকার (রাশমিকা) সাথে। তাড়াকা আসলে সাধারণ কেউ নয়, সে এক বিশেষ গোত্রের মানুষ। আলোকের প্রেমে পড়ে সে তাকে নিজের ঘরে নিয়ে যায়, কিন্তু আধুনিক সমাজের সাথে তার খাদ্যাভ্যাস আর জীবনযাপন মোটেও মেলে না।

সিনেমাটি যতটা হরর-কমেডি হওয়ার কথা ছিল, ততটা হতে পারেনি। ম্যাডক ইউনিভার্সের অন্য ছবিগুলোর মতো এখানে হাসির খোরাক বেশ কম। নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী এখানে ‘থামা’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন, কিন্তু তার অতিরিক্ত নাটকীয় অভিনয় অনেক সময় দর্শকদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া পুরো সিনেমাটি যেন ম্যাডক ইউনিভার্সের অন্যান্য চরিত্রের সাথে জোর করে যোগসূত্র তৈরির চেষ্টা করেছে, যার ফলে এর নিজস্বতা হারিয়েছে।

সবকিছুর মাঝেও সিনেমার সেরা মুহূর্ত হলো আয়ুষ্মান বনাম ভেড়িয়া (Varun Dhawan)-র সেই ধুন্ধুমার লড়াই! ভ্যাম্পায়ার বনাম ওয়্যারউলফের এই যুদ্ধ দেখার মতো ছিল। এছাড়া সিনেমার ভিএফএক্স (VFX) এবং প্রোডাকশন ডিজাইন যথেষ্ট উন্নত মানের। রাশমিকা মান্দানা নিজের চরিত্রে বেশ সাবলীল ছিলেন এবং আয়ুষ্মানও তাঁর ‘সাধারণ মানুষ’ ইমেজ ভেঙে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেছেন।

‘থামা’ সিনেমাটি দেখার পর হাসিও পায় না, আবার ভয়ও লাগে না-মাঝখানে পড়ে একটা জগাখিচুড়ি অবস্থা। তবে আপনি যদি ম্যাডক ইউনিভার্সের ডাই-হার্ড ফ্যান হন, তবে বড় পর্দায় একবার চোখ বুলিয়ে আসতে পারেন!