ঢালিউডের ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত ঘটনা কিংবদন্তি অভিনেতা সালমান শাহর মৃত্যু মামলাকে ঘিরে আদালত আবারও নড়েচড়ে বসেছেন। সম্প্রতি এক নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করে আদালত রমনা থানার ওসিকে মামলাটি পুনরায় তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রায় তিন দশক পরেও প্রিয় এই নায়কের মৃত্যু নিয়ে সেই পুরোনো প্রশ্নটি ফিরে আসছে সালমান শাহ কি আত্মহত্যা করেছিলেন, নাকি এটি ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড? গতকাল সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক বাদীপক্ষের করা রিভিশন মঞ্জুর করে এই গুরুত্বপূর্ণ রায় দেন।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৫ বছর বয়সে সালমান শাহর আকস্মিক মৃত্যু হয়, যা তার সাবেক স্ত্রী সামিরা হক 'আত্মহত্যা' বলে দাবি করেন। তবে নায়কের পরিবার এটি মেনে নেয়নি। ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই সালমানের বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী ছেলেকে হত্যা করার অভিযোগ তুলে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর সিআইডি, বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং পিবিআইয়ের মাধ্যমে মামলাটি একাধিকবার তদন্ত হয়। প্রতিটি তদন্তেই এটিকে 'আত্মহত্যা' বা 'অপমৃত্যু' বলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়, যা সালমান শাহর পরিবার প্রত্যাখ্যান করে বারবার রিভিশন মামলা দায়ের করে। কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন সালমানের মা নীলা চৌধুরী। পিবিআইয়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালত কর্তৃক গৃহীত হওয়ার পর ২০২২ সালের ১২ জুন বাদীপক্ষ পুনরায় রিভিশন মামলা দায়ের করে দাবি করেন যে একাধিক ব্যক্তির প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে সুপরিকল্পিত হত্যাকে 'আত্মহত্যা' বা 'অপমৃত্যু' বলা হচ্ছে, তাই সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য সুষ্ঠু তদন্ত প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, সালমান শাহ ক্যারিয়ারের শুরুতে ছোটপর্দায় 'আকাশ ছোঁয়া', 'দোয়েল' সহ একাধিক নাটকে অভিনয় করেন। এরপর চিত্রনায়িকা শাবনূরের সঙ্গে তার জুটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই জুটির অভিনীত সর্বাধিক ১৩টি সিনেমা বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় হিসেবে পরিচিত। তার সবশেষ অভিনীত সিনেমা ছিল ‘বুকের ভেতর আগুন’।