বিয়ের খবর লুকিয়ে রেখেছিলেন তিন বছর। বাঙালি কন্যা মোনালি ঠাকুর এখন আর শুধু বাংলার নয় ভারতজুড়ে তাঁর চর্চা। বলিউডের মঞ্চে তিনি এখন এক পরিচিত নাম। গানের জগতে যেমন সফল, অভিনয়েও সমান সাবলীল এই শিল্পীর আজ জন্মদিন। ১৯৮৫ সালের ৩ নভেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন এই জনপ্রিয় গায়িকা। আজ তাঁর জন্মদিনে যখন জীবন, কাজ ও প্রেমের নানা দিক উঠে আসছে, তখন মোনালির জীবনের একটি চাঞ্চল্যকর গোপন অধ্যায় ফের আলোচনায়: সুইজারল্যান্ডের হোটেলমালিক মাইক রিজের সঙ্গে ২০১৭ সালে বিয়ে করেও তিনি সেই খবর তিন বছর ধরে লুকিয়ে রেখেছিলেন! সুরের পরিবারে উত্থান ও সাফল্যের যাত্রা ছোটবেলা থেকেই সুর আর তাল ছিল মোনালির নিত্যসঙ্গী। তাঁর রক্তেই ছিল সঙ্গীত। বাবা শক্তি ঠাকুর ও বোন মেহুলী ঠাকুর দুজনেই ছিলেন সঙ্গীতশিল্পী। পণ্ডিত জগদীশ প্রসাদ ও পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর কাছে তিনি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতে নিয়মিত তালিম নেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই বিভিন্ন প্রাদেশিক পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন তিনি। মঞ্চে গাওয়া, নাচা সবকিছুতেই পারদর্শী এই শিল্পী তাঁর ভাগ্য খুঁজে পান 'ইন্ডিয়ান আইডল'-এর দ্বিতীয় আসরে, যেখানে তিনি সেরা ১০-এ উঠে আসেন। অভিনয় দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও গানের মঞ্চই তাঁকে খ্যাতি এনে দেয়। ২০০৮ সালে 'রেস' ছবির জন্য প্রীতমের সুরে গাওয়া 'জারা জারা টাচ মি' গানটি তাঁকে রাতারাতি তারকা করে তোলে। এরপর আইটেম সংয়ের প্রস্তাব পেলেও মোনালি থেমে থাকেননি কেবল ঝলমলে গানে। ২০১৩ সালে 'লুটেরা' ছবির 'সাওয়ার লুঁ' গান তাঁকে এনে দেয় শিল্পী হিসেবে আলাদা মর্যাদা। তাঁর কেরিয়ারের শিখর আসে ২০১৫ সালে, যখন 'দম লাগা কে হাইসা' ছবির 'মোহ মোহ কে ধাগে' গানের জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এই গান তাঁকে পৌঁছে দেয় বলিউডের সেরা নারী শিল্পীদের সারিতে। গানে-অভিনয়ে সমান দক্ষ মোনালি শুধু গানে নয়, অভিনয়েও সমান দক্ষ মোনালি। ছোটবেলায় তিনি জনপ্রিয় বাংলা ধারাবাহিক **'আলোকিত এক ইন্দু'**তে অভিনয় করেছিলেন। বড় পর্দায় প্রথম কাজ রাজা সেনের 'কৃষ্ণকান্তের উইল' ছবিতে। এরপর বলিউডে নাগেশ কুকনুরের 'লক্ষ্মী' ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করে সমালোচকদের প্রশংসা কুড়ান। ছবিটি মানব পাচার ও শিশু যৌন শোষণ নিয়ে নির্মিত। তিন বছরের গোপন প্রেমকাহিনি ও লুকোচুরির রহস্য গানের সাফল্যের আড়ালে মোনালির জীবনে আছে এক সুন্দর প্রেমকাহিনি। সুইজারল্যান্ডের হোটেলমালিক মাইক রিজকে তিনি ২০১৭ সালেই বিয়ে করেন বলে জানা গেছে। কিন্তু বিয়ের খবরটি ৩ বছর ধরে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। কোনো সংবাদমাধ্যমেই আসেনি তাঁর বিয়ের খবর। মোনালি পরে নিজেই স্বীকার করেন, তাঁদের সম্পর্ক ও বিয়ে ছিল এতটাই ব্যক্তিগত ও অনাড়ম্বর যে তাঁরা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বা প্রচারের প্রয়োজন মনে করেননি। মোনালি আরও জানিয়েছিলেন, বিয়ের সার্টিফিকেট পর্যন্ত লুকিয়ে রাখায় তাঁর স্বামী মাইকের মনে ভয় ছিল, হয়তো মোনালি তাঁকে কখনও স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেবেন না! মোনালি ঠাকুরের এই গোপন গাঁটছড়ার খবরটিই এখন তাঁর জন্মদিনে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ তৈরি করেছে। উপসংহার নিজের শর্তে বাঁচা এবং ব্যক্তিগত জীবনের গোপনীয়তাকে মর্যাদা দেওয়ার ক্ষেত্রে মোনালি ঠাকুর সত্যিই এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ। জন্মদিনে তাঁর জীবনের এই মিষ্টি গোপন অধ্যায়টি এখন তাঁর অনুরাগীদের মধ্যে নতুন করে আগ্রহ তৈরি করেছে।