মালাইকা অরোরা যখন এমটিভি ইন্ডিয়ায় ভিজে হয়ে পথচলা শুরু করেন, বয়স তখন কেবল বিশের কাছাকাছি। সেলিব্রিটিদের সাক্ষাৎকার নেওয়া আর নানা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করতে করতেই তিনি দ্রুত পরিচিত হয়ে ওঠেন। এরপর মডেলিং, বিজ্ঞাপন, মিউজিক ভিডিও সব জায়গাতেই নিজের জায়গা তৈরি করেন। আর ১৯৯৮ সালে ‘ছাইয়া ছাইয়া’ তাঁর ক্যারিয়ারকে এক ধাক্কায় আকাশচুম্বী করে দেয়। সেই বছরই তিনি বিয়ে করেন আরবাজ খানকে।

খান পরিবারে দীর্ঘ সময় ধরে তাঁর জীবন বেশ স্বস্তিতেই কেটেছে। সালমান খানের ‘দাবাং’ সিরিজেও তাঁর উপস্থিতি নজর কাড়ে। কিন্তু প্রায় ২০ বছর একসঙ্গে থাকার পর ২০১৭ সালে মালাইকা ও আরবাজ আলাদা হয়ে যান। দুজনেই বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি।

পরে দুজনেই নতুন সম্পর্কে জড়ান। আরবাজের পাশে দেখা যায় জর্জিয়া আন্দ্রিয়ানিকে, আর মালাইকা আলোচনায় থাকেন অর্জুন কাপুরের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে। অর্জুন মালাইকার চেয়ে ১২ বছরের ছোট, এই বিষয়টিই তাঁকে সবচেয়ে বেশি সমালোচনার মুখে ফেলেছে। অন্যদিকে জর্জিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর আরবাজ বিয়ে করেন ৩৫ বছরের মেকআপ আর্টিস্ট সশুরাকে এবং ৫৮ বছর বয়সে বাবা হন। অথচ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু বারবার মালাইকা, যেন তাঁর যেকোনো সিদ্ধান্তই বিতর্কের ইন্ধন।

এক সাম্প্রতিক অনুষ্ঠানে মালাইকা এসব অভিজ্ঞতা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেন। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বছরের পর বছর ধরে যে সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছে, সেই দ্বিচারিতার দিকেই আঙুল তোলেন তিনি।

বারখা দত্তর সঙ্গে ‘মোজো স্টোরি’র আলাপে মালাইকা বলেন, দৃঢ় স্বভাবের নারী হলে নিয়মিতই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। জীবনে আসা কিছু পুরুষ তাঁকে দারুণভাবে সমর্থন করেছেন এ জন্য তিনি কৃতজ্ঞ।

তিনি আরও বলেন, সমাজ একই ঘটনায় পুরুষ ও নারীকে ভিন্ন মানদণ্ডে মাপে। পুরুষ যদি নতুন সম্পর্কে যায়, ডিভোর্স দেয় অথবা অর্ধেক বয়সী কাউকে বিয়ে করে তাহলে সেটাকে বাহবা দেওয়া হয়। কিন্তু নারী একই সিদ্ধান্ত নিলে প্রশ্ন শুরু হয় কেন করল, তার কি বিচারবুদ্ধি নেই? এই স্টেরিওটাইপ এখনও সমাজে রয়ে গেছে।

তরুণ বয়সের কথা মনে করে মালাইকা বলেন, তখন ভাবতেন কয়েকটা গান করবেন, বিয়ে করবেন, সংসার করবেন ব্যস। ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় কোনো স্বপ্নই ছিল না। পরে বুঝেছেন, তিনি আসলে আরও দূর পর্যন্ত যেতে চান, নতুন কিছু করতে চান।

২৫ বছর বয়সে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত তাঁর মাকে বিস্মিত করেছিল, সেটাও তিনি স্মরণ করেন। মা সব সময় বলতেন, আগে জীবনটা দেখো, উপভোগ করো; প্রথম প্রেমকেই বিয়ে কোরো না। কিন্তু মালাইকা ঠিক সেটাই করেছিলেন। মা অবাক হলেও কখনোই স্বপ্ন দেখায় বা এগিয়ে যেতে বাধা দেননি, এ কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে উল্লেখ করেন মালাইকা।