ভারতের প্রখ্যাত গায়ক জুবিন গার্গের রহস্যজনক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আসাম রাজ্যের বাকসা জেলা উত্তাল হয়ে উঠেছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে বাকসার মুসালপুর এলাকায় ধৃত পাঁচ অভিযুক্তকে কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় জনরোষে গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং ইট-পাটকেল ছোড়ে।

পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোড়া পাথরের আঘাতে এক প্রবীণ পুলিশ কর্তা এবং বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ব্যবহার করে, যাতে কিছু বিক্ষোভকারীও আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বাকসা জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা অনুযায়ী জেলাজুড়ে পাঁচজনের বেশি মানুষের জমায়েত আপাতত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধাপে ধাপে সব পরিষেবা ফের চালু করা হবে।

জানা গেছে, বুধবার দুপুর থেকেই মুসালপুরের সংশোধনাগারের বাইরে ভিড় জমতে থাকে। 'জাস্টিস ফর জুবিন' স্লোগান দিতে দিতে ভিড় আরও বাড়ে। পুলিশের গাড়ি জেলের গেটে পৌঁছতেই উত্তেজনা চরমে ওঠে। জনতা একের পর এক পাথর ছুড়তে শুরু করে পুলিশকর্মীদের দিকে এবং পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ কোনোক্রমে অভিযুক্তদের নিয়ে জেলের ভিতরে ঢোকে। কিন্তু উত্তেজিত জনতা জেলের সদর দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের হাতাহাতি শুরু হয়। বারবার সতর্ক করার পরেও জনতা পিছু না হটায় পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেয়।

গায়ক জুবিন গার্গের মৃত্যু ঘিরে এখনো রহস্য বিরাজ করছে। কয়েকদিন আগেই আসাম সিআইডির বিশেষ তদন্তকারী দল জুবিনের দুই ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রেফতার করে। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত এই মামলায় সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে বুধবার জেলে পাঠানোর সময়ই এই সহিংস পরিস্থিতির উদ্ভব হয়।