কলকাতা থেকে মুম্বাই—সঙ্গীতশিল্পী জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের গানে মুগ্ধ দর্শক-শ্রোতা। তবে আজকের এই সফলতার পেছনের গল্পটা মোটেও সহজ ছিল না। পুজোর আগে সেই কঠিন দিনগুলোর স্মৃতিচারণা করেছেন এই জনপ্রিয় গায়ক।
পুজোর টানে বারবার শহরে ফেরা
বরাহনগরের ছেলে জিৎ এখন মুম্বাইয়ের বাসিন্দা। কিন্তু দুর্গাপূজা এলেই তার মন ছুটে যায় কলকাতায়। সারা বছর যেখানেই থাকুন না কেন, পুজোর চারটা দিন চেষ্টা করেন নিজের শহরে ফিরতে। তিনি বলেন, “আলমবাজারে আমাদের বাড়ি ছিল। পুজোর সময় হাঁটতে হাঁটতে দক্ষিণেশ্বর, উত্তরপাড়া, হিন্দমোটর-এর ঠাকুর দেখতে চলে যেতাম। বালি ব্রিজে কত যে হেঁটেছি!” এখন সেই দিনগুলোর কথা খুব মনে পড়ে তার। যদিও পেশাগত কারণে অনেক সময় তার পক্ষে কলকাতায় আসা সম্ভব হয় না।
স্ত্রীকে উপহার দিতে না পারার আক্ষেপ
স্ত্রী চন্দ্রাণী গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার সম্পর্কের শুরুর দিনগুলোও ছিল সংগ্রামের। জিৎ জানান, যখন তাদের বিয়ে হয়, তখন তিনি মুম্বাইয়ে নিজের অবস্থান তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন। পকেটে মাত্র আট টাকা ছিল, তাই তিনি স্ত্রীকে কোনো উপহার দিতে পারেননি। সেই সময় তারা একটি রগড়া প্যাটি কিনে দুজনে ভাগ করে খেতেন।
তবে আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও চন্দ্রাণী তার কাছে একটি বিশেষ উপহার চেয়েছিলেন—বাংলা সিনেমার গান। জিতের ভাষায়, "সেই আশাপূরণ করেছি ওর।" এখন যখন পুজোর প্যান্ডেলে তার গান বাজে, সেটা তার কাছে এবং তার পরিবার, বিশেষ করে মা-বাবার কাছে এক বড় প্রাপ্তি। আর্থিক অবস্থা ভাল হওয়ার পর এখন প্রতি বছর পুজায় স্ত্রীকে একটি বিশেষ শাড়ি উপহার দেন জিৎ।
নতুন গান ও পুজোর পরিকল্পনা
এই বছরের দুর্গাপূজার জন্যও নতুন গান তৈরি করেছেন জিৎ। তার পাঁচটি নতুন গান মুক্তি পাবে, যার মধ্যে দুটি গান লিখেছেন এবং সুর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও, সুরুচি সংঘের গান গেয়েছেন এবং তার ইউটিউব চ্যানেলে একটি আগমনীর গান মুক্তি পাবে, যার সুর করেছেন জিৎ এবং গেয়েছেন তার স্ত্রী চন্দ্রাণী।