অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালীন রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে তার প্রত্যাশা বেড়েছিল। তবে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি গত এক বছরে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন এবং তার স্বপ্নভঙ্গের কথা জানিয়েছেন।

আইনশৃঙ্খলা ও সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা

বাঁধন জানান, গত এক বছরে দেশে 'মব কালচার' (Mob Culture) এবং নারীর প্রতি বিদ্বেষ বেড়েছে, যা তাকে গভীরভাবে হতাশ করেছে। তিনি মনে করেন, মানুষ দেশ নিয়ে স্বপ্ন হারাচ্ছে।

অভিনেত্রী বলেন, “জুলাইয়ে যারা রাজপথে ছিলাম, একেকজন একেক ইস্যুতে মাঠে নেমেছে। আমি চেয়েছি সাম্যের বাংলাদেশ, মানুষের অধিকার ও ন্যায়বিচারের জন্য। সেই জায়গা থেকে এটা ঐতিহাসিক সুযোগ ছিল... কিন্তু সত্যি বলতে আমাদের প্রত্যাশাও হয়তো বেশি ছিল। আমরা একটা দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ। এ কারণে ভালো কাজ করা যে সহজে সম্ভব, তাও নয়।”

তিনি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমালোচনা করে বলেন, "মব কালচার, নারীর প্রতি বিদ্বেষ। ভাস্কর্য ভাঙা হয়েছে। স্থাপনা ও মাজার ভাঙা হলো। সব মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলাও হতাশার। এসব আসলে লজ্জার ও দুঃখের।"

স্বপ্নভঙ্গ ও সরকারের পারফরম্যান্স

বাঁধন মনে করেন, যে স্বপ্নের জন্য আন্দোলন করা হয়েছিল, সেই সুযোগ হয়তো হাতছাড়া হয়েছে। সরকারের পারফরম্যান্স তাকে অস্বস্তিতে ফেলেছে।

তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, "যে স্বপ্ন দেখেছি, যে সুযোগ ছিল- সেটা হয়তো হারিয়েছি বলে মনে হয় এখন। সরকারের পারফরম্যান্স আমাকে অন্তত আনকমফোর্টেবল করেছে। ডিজহার্টেড (হতাশ) হয়েছি।"

ডানপন্থা ও নারী বৈষম্য প্রসঙ্গে

দেশে ডানপন্থা রাজনীতির উত্থান এবং নারীদের প্রতি বৈষম্য বৃদ্ধির প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, এসব বিষয় হঠাৎ করে আসেনি, আগেও ছিল, হয়তো এভাবে মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। তবে তিনি এই বৈষম্যগুলোকে কখনোই মেনে নেন না।

বাঁধন তার অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, “আমি সম্পূর্ণ স্বাধীনতা চাই। প্রতিটি মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। বিপ্লবটা সেই আশাতেই করেছিলাম।”