বিশ্বমঞ্চে মানবিকতা দেখিয়ে কীভাবে মুকুট জিতলেন ভারতের এই সুন্দরী?
১৯৯৪ সালের এই দিনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার ৪৪তম আসর। দক্ষিণ আফ্রিকার সান সিটিতে অনুষ্ঠিত এই বৈশ্বিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন ৮৭টি দেশের প্রতিযোগী। সবার প্রত্যাশা পেছনে ফেলে বিজয়ী হন ভারতের ঐশ্বরিয়া রাই। জ্যামাইকার লিসা হানা বিজয়ের মুহূর্তে ২১ বছর বয়সী ঐশ্বরিয়ার মাথায় মুকুট পরিয়ে দেন। তাঁর এই জয় শুধু ভারতের নয়, বিশ্বজুড়ে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার মঞ্চে এক নতুন ইতিহাস তৈরি করেছিল।
জয়ের মুহূর্তে ঐশ্বরিয়ার পরনে ছিল কারুকাজ করা নজরকাড়া সাদা গাউন, সঙ্গে সাদা গ্লাভস ও মাথার ওপরের দিকে বাঁধা টপ বান হেয়ারস্টাইল যা তাঁর আভিজাত্য বাড়িয়ে দিয়েছিল। মুকুট পরার আগে গাঢ় রঙের সুইমিং স্যুটে তিনি মঞ্চে হেঁটেছিলেন, যা দর্শকদের দারুণভাবে মুগ্ধ করে।
চূড়ান্ত পর্বে ঐশ্বরিয়াকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করা হয়েছিল‘একজন মিস ওয়ার্ল্ডের মধ্যে কী কী গুণ থাকা উচিত?’
অনেকেই মনে করেন, তাঁর দেওয়া উত্তরটিই তাঁকে সে বছর এই খেতাব এনে দেয়। বুদ্ধিদীপ্ত সেই উত্তরে তিনি প্রমাণ করেছিলেন, একজন বিশ্বসুন্দরীর কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, মানবিক মূল্যবোধও থাকা আবশ্যক।
ঐশ্বরিয়া উত্তরে বলেছিলেন:"আজ পর্যন্ত যাঁরা মিস ওয়ার্ল্ড হয়েছেন, তাঁরা দেখিয়েছেন তাঁদের হৃদয়ে ছিল প্রকৃত মমতা। সেই মমতা শুধু বিত্তশালী মানুষের প্রতি নয়, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের প্রতিও। জাতি, দেশ বা গায়ের রঙের ভেদাভেদ ভুলে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মনোভাবই একজন সত্যিকারের মিস ওয়ার্ল্ডের গুণ হওয়া উচিত।"
মিস ওয়ার্ল্ড ১৯৯৪-এর স্মৃতিচারণামূলক একটি ভিডিওতে ঐশ্বরিয়া জানান, বিশ্বমঞ্চে নিজের দেশের প্রতিনিধিত্ব করা ছিল এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। তাঁর কথায়, এক মাস একসঙ্গে থেকে বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীদের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে তাঁদের। তিনি মনে করেন, জীবনের পথে হয়তো আর সবাই একসঙ্গে হবেন না তবু সেই সময়ের স্মৃতি তাঁর কাছে বিশেষ সম্পদ বলেই মনে হয়।
ঐশ্বরিয়া রাইয়ের এই বিজয় শুধু সৌন্দর্য বা বুদ্ধিমত্তার জয় ছিল না, বরং মানবিকতার জয় ছিল। সেই দিনের সেই উত্তরটিই আজও তাঁকে একজন আইকনিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে রেখেছে। এই বিজয়ের পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।