যুক্তরাষ্ট্রের উৎসবে মোশাররফ করিমের ২৪ মিনিটের স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘আবর্ত—দ্য সার্কেল’

জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম অভিনীত একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব ‘৮ম বেঙ্গলি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ডালাস ২০২৫’-এ। ২৪ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই চলচ্চিত্রের নাম ‘আবর্ত—দ্য সার্কেল’, যেটি নির্মাণ করেছেন তরুণ পরিচালক মাহমুদুল হাসান।

এই সিনেমায় মোশাররফ করিমের সঙ্গে মুখ্য ভূমিকায় আছেন অভিনেত্রী রোবেনা রেজা জুঁই। আরও অভিনয় করেছেন আভা রানী, অগ্রগামী সাম্য এবং নিজাম উদ্দীন।

চলচ্চিত্রটির কাহিনির পটভূমি বাংলাদেশের একটি উপকূলবর্তী পর্যটনকেন্দ্রিক জনপদ। সেখানে একটি ছোট কাঁকড়া ভাজার দোকান রয়েছে, যেখানে প্রতিদিন ভিড় করেন দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা। দোকানের পেছনে একটি ছোট রান্নাঘর—যেখান থেকে ধোঁয়া আর মসলার ঘ্রাণের আড়ালে চলতে থাকে এক নারীর নীরব সংগ্রাম। এই নারী শুধু একজন মা নন, তিনি একজন সংগ্রামী নারী, যিনি সমাজের কঠিন শর্ত, অতীতের ক্ষত আর ভেঙে যাওয়া স্বপ্নের ভার বয়ে বেড়ান।

পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, “আমাদের সমাজে অনেক নারী রয়েছেন, যারা দিনের পর দিন নিঃশব্দে লড়াই করে যান—তাঁদের ছোট ছোট ত্যাগ, অভিমান, অনুচ্চারিত যন্ত্রণা আমাদের চোখে পড়ে না। ‘আবর্ত—দ্য সার্কেল’ সেইসব নারীর গল্প, যারা নিজের অতীত, নিঃসঙ্গতা ও সামাজিক বিধিনিষেধের চক্র ভেঙে বেরিয়ে আসার স্বপ্ন দেখেন। এটা এক ধরনের নীরব বিদ্রোহ।”

চলচ্চিত্রটি উৎসবে প্রদর্শিত হবে ২ আগস্ট, স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে, ডালাস শহরের অ্যাঞ্জেলিকা ফিল্ম সেন্টার অ্যান্ড ক্যাফেতে। উৎসব শুরু হবে ১ আগস্ট।

বিশেষ তথ্য হলো—এই উৎসবে জমা পড়েছিল ২৩৮টি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র। সেখান থেকে মাত্র চারটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে প্রদর্শনের জন্য। ‘আবর্ত—দ্য সার্কেল’ সেগুলোর একটি।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, একই সেশনে প্রদর্শিত হবে ভারতের কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা মৃণাল সেনকে নিয়ে নির্মিত সৃজিত মুখার্জির জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘পদাতিক’

গত ঈদুল আজহায় মুক্তিপ্রাপ্ত সঞ্জয় সমাদ্দার পরিচালিত ‘ইনসাফ’ চলচ্চিত্রে মোশাররফ করিমের অভিনয় প্রশংসা কুড়িয়েছিল দর্শকমহলে। এরপর আবারও আলোচনায় এলেন এই স্বল্পদৈর্ঘ্য আন্তর্জাতিক অর্জনের মধ্য দিয়ে।

এই স্বীকৃতি শুধু মোশাররফ করিম বা পরিচালক মাহমুদুল হাসানের জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাণ ও বিষয়নির্ভর কনটেন্ট তৈরির জন্যও বড় এক সাফল্য।

এমন গল্প ও শিল্পীর সমন্বয়ে নির্মিত সিনেমা আন্তর্জাতিকভাবে প্রদর্শনের সুযোগ পেলে বাংলা ভাষার সংস্কৃতি, সমাজ ও বাস্তবতাকেও বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার সুযোগ তৈরি হয়—‘আবর্ত—দ্য সার্কেল’ তার একটি প্রমাণ।