ওটিটিতে মুক্তির পর আবারও আলোচনায় এসেছে চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত ‘উৎসব’। পরিবারের সবাইকে নিয়ে হলে বসে দেখার মতো গল্পে তৈরি এই সিনেমায় ভূতের চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান, অপি করিম ও চঞ্চল। চরকিতে মুক্তির পর কলকাতার সমালোচকরাও ইতিবাচক রিভিউ দিয়েছেন, যা অভিনেতার কাছে আনন্দের।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে অনুষ্ঠিত অষ্টম বাংলা চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিতে গিয়েছিলেন চঞ্চল। সেখানে তাঁর অভিনীত ‘পদাতিক’ প্রদর্শিত হয়, পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে প্রদর্শিত হয় আকরাম খানের ‘নকশিকাঁথার জমিন’ এবং মোশাররফ করিম–জুঁই অভিনীত একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। লালগালিচায় সংবর্ধনা, হাউসফুল শো এবং ৪৫ মিনিটের প্রশ্নোত্তর সেশন,সব মিলিয়ে অভিজ্ঞতাটি তাঁর কাছে ছিল দারুণ স্মরণীয়।

ডালাস থেকে নিউইয়র্ক হয়ে বর্তমানে কলকাতায় অবস্থান করছেন তিনি। এবার এসেছেন ব্রাত্য বসুর নতুন সিনেমা ‘শিকড়’-এ চুক্তিবদ্ধ হতে। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুটি ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত এই ছবির শুটিং শুরু হবে অক্টোবর থেকে। ছবির কাহিনি ও চরিত্র নিয়ে এখনই কিছু জানাতে চান না চঞ্চল, তবে এটুকু ইঙ্গিত দিয়েছেন গল্পটি দর্শকের জন্য আলাদা অভিজ্ঞতা হবে।

‘উৎসব’ নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “এই ধরনের গল্প বাংলাদেশে খুব বেশি হয় না। এখানে ভূতের চরিত্রে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা একেবারেই নতুন। মজার বিষয় হলো, ছবিতে আমরা নিজেরাই নিজেদের সমালোচনা করেছি, যা সাধারণত সমাজে দেখা যায় না। এখন অনেকেই অন্যের সমালোচনা বা ট্রল করতে বেশি আগ্রহী, নিজের দিকে কম তাকাই।” তাঁর মতে, ছবির সাফল্যে মুখে মুখে প্রচারণা বড় ভূমিকা রেখেছে  দর্শক নিজেরাই অন্যকে ছবিটি দেখার জন্য উৎসাহিত করেছেন।

মোশাররফ করিমের সঙ্গে ‘ইনসাফ’-এ অতিথি চরিত্রে অভিনয় প্রসঙ্গে চঞ্চল বলেন, “সিনেমা সবসময় টিমওয়ার্ক। বড় বা ছোট চরিত্র নয়, গল্পে চরিত্রের গুরুত্বটাই আসল।” প্রতিদ্বন্দ্বিতার গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে তিনি জানান, মোশাররফের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব রয়েছে, এবং দুজনেই একে অপরের কাজ থেকে অনুপ্রেরণা পান।

অতিথি চরিত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তিনি মনে করেন, প্রযোজক-নির্মাতারা দর্শকের জন্য চমক সৃষ্টি করতে চাইলে তিনি রাজি হয়ে যান। এতে সিনেমার প্রতি দর্শকের আগ্রহ বাড়ে, যা শিল্পের জন্য ইতিবাচক। চঞ্চল বিশ্বাস করেন, শাকিব খান, সিয়াম, নিশো সবাই মিলে একে অপরের সিনেমায় উপস্থিত হলে সেটি ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভালো।

আসন্ন সিনেমা ‘দম’ নিয়ে তিনি জানান, এটি জীবনীশক্তির গল্প-যতক্ষণ তোমার দম আছে, ততক্ষণ তুমি বাঁচবে এবং লড়াই চলবে। পরাজয় মানতে না দেওয়ার এই বার্তাই ছবির মূল বক্তব্য।

অভিনয় বাছাই প্রসঙ্গে চঞ্চল বলেন, “সব সময় ভাবি, নতুন চরিত্রটি আগের কাজ থেকে কতটা আলাদা। আর নতুন নির্মাতারা যখন ডাকে, তখন ধরে নিই তারা নতুন কিছু ভেবেই আমাকে নিয়েছে।”

শিল্পীর সামাজিক দায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা বিনোদনের জন্য কাজ করি, কিন্তু সেই সঙ্গে সমাজের কিছু গল্পও বলতে হয়। যদি তা দর্শকের জন্য ইতিবাচক বার্তা বয়ে আনে, সেটি বড় পাওয়া। একজন অভিনেতা হিসেবে এই আদর্শিক জায়গা থেকেই কাজ করা উচিত।”