বলিউডের দীর্ঘ ২২ বছরের যাত্রায় অভিনেতা শহিদ কাপুর নিজেকে প্রমাণ করেছেন একজন বহুমুখী ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ শিল্পী হিসেবে। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে 'ইশ্ক বিশ্ক'-এর মতো হিট দিয়ে শুরু করেও কেন তিনি শাহরুখ বা সালমানের মতো 'সুপারস্টার'-এর তকমা পেলেন না? নাকি তিনি নিজেই সেই ছকবাঁধা পথ এড়িয়ে শিল্পের সাধনায় ব্রতী হয়েছেন?
২০০৩ সালে কিশোর হিরো হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা শহিদ Kapoor, মা নীলিমা আজিম ও বাবা পঙ্কজ কাপুরের উত্তরাধিকার বহন করেও কখনো সেই পরিচয়কে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করেননি। তাঁর চলার পথ কখনোই মসৃণ ছিল না। 'ফিদা', 'দিল মাঙ্গে মোর'-এর মতো শুরুর দিকের ছবিগুলো প্রত্যাশিত সাফল্য আনতে পারেনি। তবে শহিদ থেমে থাকেননি, বরং ব্যর্থতার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে গড়ে তুলেছেন।
তাঁর ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয় 'চুপ চুপ কে' এবং পরবর্তীতে 'হায়দার' (২০১৪) ও 'উড়তা পাঞ্জাব' (২০১৬)-এর মতো ছবিগুলো। বিশেষত, বিশাল ভরদ্বাজের 'হায়দার'-এ শেক্সপিয়রের হ্যামলেট চরিত্রটিকে কাশ্মীরি প্রেক্ষাপটে ফুটিয়ে তোলার মধ্য দিয়ে তিনি একজন নিখাদ শিল্পীর আত্মসমর্পণ দেখিয়েছেন। এই ছবিগুলো প্রমাণ করে, শহিদ নিজেকে তারকা নয়, বরং একজন অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে 'কবীর সিং'-এর মতো বিতর্কিত কিন্তু ব্লকবাস্টার হিট বা 'উড়তা পাঞ্জাব'-এর মতো ঝুঁকিপূর্ণ চরিত্রে তাঁর অভিনয় দক্ষতা ও ব্যক্তিত্বের মিশেল তাঁকে দর্শকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। শহিদের চলচ্চিত্র-জীবন যেন এক পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফসল যেখানে তিনি সুপারস্টারের চকচকে মুখ নয়, বরং চরিত্রের আত্মার গভীরে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন। ২২ বছরের এই দীর্ঘ পথচলায় সিনেমার সংখ্যা দিয়ে নয়, বরং তাঁর শিল্প ও চরিত্রের প্রতি নিষ্ঠা দিয়ে তাঁকে বিচার করা উচিত, যেখানে অমরত্ব আসে অভিনেতার দক্ষতা থেকেই।