প্রেমে আগে মন, না কি শরীর? এই প্রশ্নে আবারও মুখর বলিউড ও সমাজমাধ্যম। মন ছাড়া প্রেম অসম্পূর্ণ, আবার শরীরী টানও প্রেমকে করে তোলে আরও গভীর এই প্রাচীন সমীকরণে এবার মতবিরোধ ছড়িয়েছে টুইঙ্কল খন্না, কাজল ও জাহ্নবী কপূরের বক্তব্য ঘিরে।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে টুইঙ্কল ও কাজল বলেন, সম্পর্কের মাঝে তৃতীয় কেউ এলে তাকে মন দেওয়া যাবে না, কিন্তু শরীর দেওয়া প্রতারণা নয়। তাঁদের মতে, বয়স বাড়লে এই বাস্তবতা মেনে নেওয়া যায়। এই বক্তব্যেই আপত্তি জাহ্নবী কপূরের। তাঁর মতে, “প্রতারণা মানেই প্রতারণা শারীরিক হোক বা মানসিক, দুই-ই অগ্রহণযোগ্য।” কাজল ও টুইঙ্কল যুক্তি দেন, বয়সের সঙ্গে উপলব্ধি বদলায়, তাই জাহ্নবীও একদিন তাঁদের মতো ভাববেন। কর্ণ জোহরও একমত হন তাঁদের সঙ্গে।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, শরীরের প্রতারণা কি সত্যিই ক্ষমার যোগ্য? শারীরিক সম্পর্কে কি শুধুই দেহ জড়িত, না কি মনও কোথাও না কোথাও সাড়া দেয়? কেউ কেউ বলেন, নতুন প্রজন্ম মন ও শরীরের গণ্ডি টানতে শিখেছে ‘ফ্রেন্ডস উইথ বেনিফিটস’, ‘অ্যাসেক্সুয়াল প্রেম’ ইত্যাদি ধারণা এখন বেশ পরিচিত। আবার কেউ মনে করেন, বিবাহিত জীবনের বাইরে শারীরিক সম্পর্কও এখন অনেকের কাছে বাস্তব, কিন্তু সেটা কি আধুনিকতা না প্রতারণা?
ক্যাটরিনা কাইফ পুরনো এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “প্রেমে মন ও শরীর সমান গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বাসঘাতকতা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।” বিপাশা বসুও বলেন, একবার প্রতারণা ঘটলে সম্পর্ক আর আগের মতো থাকে না।
মন-শরীরের এই দ্বন্দ্বে বিশেষজ্ঞরাও যুক্ত হয়েছেন। তাঁদের মতে, ডোপামিন ও ভ্যাসোপ্রেসিন হরমোন যৌন তৃপ্তি ও সংযোগ তৈরিতে বড় ভূমিকা রাখে। বয়স বাড়লে এই হরমোনের প্রভাবও বদলায়, তাই অনেক সময় শারীরিক সম্পর্ককে মানুষ হালকাভাবে নেয়। টুইঙ্কল ও কাজলের মতো কেউ কেউ বলেন, “রাত গয়ি, বাত গয়ি।” তবে অনিল কপূর মনে করেন, “বয়স যাই হোক, সম্পর্কে সততা সবচেয়ে জরুরি।”
রণবীর কপূর একসময় স্বীকার করেছিলেন, তরুণ বয়সে পরিণতিবোধের অভাবে প্রতারণাকে অন্যায় ভাবতেন না, এখন অবশ্য সম্পূর্ণ বদলে গেছেন। আলিয়া ভট্টের মতে, সঙ্গী যদি তৃতীয় কাউকে মন দেন, তবেই সম্পর্ক ভাঙবে।তবে শরীরের প্রসঙ্গ তিনি এড়িয়ে যান।
নেটিজেনদের মধ্যে বিতর্ক চলছে কেউ বলেন, প্রকৃত বোঝাপড়া থাকলে অন্য কারও প্রতি শারীরিক আকর্ষণ তৈরি হয় না। আবার কেউ মনে করেন, “সবই হরমোনের খেলা।”
শেষ পর্যন্ত প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে মন আর শরীরের লড়াইয়ে প্রেমের আসল মাপকাঠি কোনটা? কাজল-টুইঙ্কলের মত কি নতুন প্রজন্মের মূল্যবোধ বদলে দেবে, নাকি জাহ্নবীর মতো অনেকে এখনও বিশ্বাস করবেন, মন আর শরীর দুটোই সমানভাবে পবিত্র ও অখণ্ড?