চলতি সপ্তাহজুড়ে তুমুল আলোচনার মাঝেই মিস ইউনিভার্স ২০২৫ের শিরোপা উঠল মেক্সিকোর ফাতিমা বোশের মাথায়। ২৫ বছর বয়সী এই মানবাধিকারকর্মী থাইল্যান্ডে এক প্রাক-আয়োজনে পেজেন্ট ডিরেক্টরের প্রকাশ্য ধমক খাওয়ার পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। সেই ঘটনার প্রতিবাদে কয়েকজন প্রতিযোগীর ওয়াকআউট পুরো বিষয়টিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে।
গতবারের বিজয়ী ডেনমার্কের ভিক্টোরিয়া কেয়ার থেইলভিগের হাত থেকে মুকুট গ্রহণ করেন বোশ। প্রথম রানার-আপ হন থাইল্যান্ডের প্রাভিনার সিং। এরপর স্থান পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার স্টেফানি আবাসালি, ফিলিপাইনের আথিসা মানালো এবং আইভরি কোস্টের অলিভিয়া ইয়াসে।
প্রতি বছর লাখো দর্শক যে প্রতিযোগিতাকে বিউটি পেজেন্টের “সুপার বোল” বলে বর্ণনা করেন, সেই আয়োজনে এবার অংশ নেয় ১২০টি দেশ। প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনের নাদিন আয়ুব মঞ্চে প্রতিনিধিত্ব করেন এবং সেরা ৩০-এ জায়গা করে নেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মার্কিন কমেডিয়ান স্টিভ বার্ন, আর ওপেনিং পারফরম্যান্সে ছিলেন থাই শিল্পী জেফ স্যাচুর।
সুইমস্যুট রাউন্ড শেষে ৩০ জন থেকে বাছাই করা হয় সেরা ১২। ইভনিং গাউন রাউন্ড শেষে নির্ধারিত হয় শেষ পাঁচজন। ফাইনালে প্রতিযোগীদের সামনে রাখা হয় দুটি প্রশ্ন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে কোন ইস্যু তুলবেন এবং তরুণী মেয়েদের অনুপ্রাণিত করতে মিস ইউনিভার্স প্ল্যাটফর্ম কীভাবে ব্যবহার করবেন।
প্রশ্নোত্তরে বোশ নিজের বক্তব্যে বলেন, নিজের সত্যিকারের সত্তায় বিশ্বাস রাখার শক্তির কথা এবং কাউকে নিজের মূল্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি করতে না দেওয়ার আহ্বান জানান।
তিন সপ্তাহ ধরে থাইল্যান্ডজুড়ে নানা রিহার্সাল ও কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন প্রতিযোগীরা। বুধবারের ন্যাশনাল কস্টিউম শোতে তাঁরা নিজেদের দেশের সংস্কৃতি তুলে ধরেন।
এদিকে আয়োজনকে ঘিরে চলেছে নানা বিতর্ক। মাসের শুরুতে হওয়া ওয়াকআউট আয়োজনের স্বচ্ছতা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে নতুন প্রশ্ন তোলে। এক লাইভ ব্রিফিংয়ে মিস ইউনিভার্স থাইল্যান্ডের ডিরেক্টর নাওয়াত ইৎসারাগ্রিসিল অভিযোগ তোলেন যে বোশ যথেষ্ট প্রোমোশনাল কনটেন্ট পোস্ট করছেন না। তিনি “ডামহেড” বলার অভিযোগ অস্বীকার করলেও স্বীকার করেন যে বোশের “ড্যামেজ” করার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। আপত্তি জানালে তিনি নিরাপত্তা ডেকে বোশকে বের করে দিতে বলেন, আর এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে অন্য প্রতিযোগীরাও বেরিয়ে আসেন।
ঘটনা আন্তর্জাতিক আলোচনায় পরিণত হয়। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম নাওয়াতের আচরণকে “আক্রমণাত্মক” বলে মন্তব্য করেন এবং বলেন, বোশ বিষয়টি মর্যাদার সঙ্গে সামলেছেন। পরে আয়োজক সংস্থা নাওয়াতের দায়িত্ব সীমিত করে এবং এক অনুষ্ঠানেই তিনি ক্ষমা চান।
অন্যদিকে মিস ইউনিভার্স ১৯৯৬ আলিসিয়া মাচাডো ইনস্টাগ্রাম লাইভে নাওয়াতকে নিয়ে বর্ণবাদী মন্তব্য করায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন।