‘কে-পপ ডেমন হান্টার্স’: নেটফ্লিক্সের গ্লোবাল হিট অ্যানিমেশন সিনেমা
২০ জুন মুক্তি পেয়েছে সনি পিকচারসের অ্যানিমেশন সিনেমা ‘কে-পপ ডেমন হান্টার্স’। মুক্তির পরই এটি নেটফ্লিক্সের ৯৩টি দেশে শীর্ষ ১০ তালিকায় জায়গা করে নেয়। এক মাস পেরিয়ে গেলেও বিশ্বব্যাপী নেটফ্লিক্স গ্লোবাল টপ লিস্টে শীর্ষস্থান ধরে রাখছে এই সিনেমা। সময়ের সঙ্গে কিছু সময় শীর্ষস্থান থেকে নামলেও দ্রুত আবারও ১ নম্বরে ফিরেছে ‘কে-পপ ডেমন হান্টার্স’, যা নেটফ্লিক্স অ্যানিমেশন সিনেমার ইতিহাসে নতুন রেকর্ড।
সিনেমার প্রধান তথ্যের মধ্যে রয়েছে ‘কে-পপ ডেমন হান্টার্স’ নামক এ অ্যানিমেশনটি। গল্প ও সহ-পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন ম্যাগি ক্যাং, আর পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন ক্রিস অ্যাপেলহ্যান্স ও ম্যাগি ক্যাং। এটি একটি অ্যানিমেশন, অ্যাকশন এবং মিউজিক্যাল ঘরানার সিনেমা, যা নেটফ্লিক্স প্ল্যাটফর্মে স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে দর্শকদের সামনে এসেছে। সিনেমাটির মোট সময়কাল প্রায় ১ ঘন্টা ৩৫ মিনিট।
গল্পের মূল কেন্দ্রবিন্দু তিনজন কে-পপ আইডল—রুমি, মিরা ও জোয়ি, যারা ‘হানট্রিক্স’ নামের সুপারস্টার গার্ল ব্যান্ডের সদস্য। তারা গানের শক্তি দিয়ে শয়তান বা ‘ডেমন’দের পরাজিত করে। কিন্তু হঠাৎ রুমি গান গাইতে পারবে না, আর তখন আসলো নতুন বয় ব্যান্ড ‘সাযা বয়েজ’, যাদের মধ্যে লুকিয়ে আছে বিপজ্জনক ডেমন। ‘হানট্রিক্স’ ও ‘সাযা বয়েজ’র মধ্যকার সংঘাত ও রহস্যের গল্পটাই সিনেমার মূল আকর্ষণ।
সিনেমাটি দেখতে পেলে মনে হবে এটি এক ফ্যান্টাসি কাহিনি, তবে এতে রয়েছে হাস্যরস, কে-পপ জগতের নানা খুঁটিনাটি, দুর্দান্ত গান ও কোরীয় লোককাহিনীর মিশেল। নির্মাতা ক্রিস অ্যাপেলহ্যান্স ও ম্যাগি ক্যাংয়ের কাজ দর্শকদের সব বয়সের জন্য উপভোগ্য করে তুলেছে। এটি কোরীয় কার্টুন ও কমিক্সকে সম্মান জানায়।
কোরিয়ান লোককথার সংগীতশক্তিকে আধুনিক কে-পপ গানের সঙ্গে মিশিয়ে গল্পটি তৈরি করা হয়েছে। ‘সাযা বয়েজ’র সদস্যদের লুকানো বিপদের সামনে ‘হানট্রিক্স’র নারীদের ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থা নতুন প্রজন্মের কে-পপ ক্রেজের প্রতিফলন। সিনেমায় হিংসার পরিবর্তে চোখজুড়িয়ে দেয়া রঙিন কনফেটি বিস্ফোরণের মাধ্যমে যুদ্ধে ভিন্নতা আনা হয়েছে।
সিনেমার গানগুলো বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। ‘গোল্ডেন’ ও ‘ইয়োর আইডল’ গান দুটি বিশ্বজুড়ে সংগীতপ্রেমীদের মধ্যে জনপ্রিয়। ‘গোল্ডেন’ জুলাইয়ে স্পটিফাই গ্লোবাল ডেইলি চার্টে ও যুক্তরাষ্ট্র চার্টে শীর্ষস্থান দখল করেছে, পাশাপাশি বিলবোর্ড হট ১০০-এ ৬ নম্বরে উঠে এসেছে। ‘ইয়োর আইডল’ গানটিও বিলবোর্ডে জায়গা পেয়েছে। স্ট্রিমিং সংখ্যার দিক থেকে ‘কে-পপ ডেমন হান্টার্স’ চলতি বছর সেরা অ্যানিমেশন সাউন্ডট্র্যাক।
যদিও সিনেমার ব্যান্ড ও চরিত্রগুলো কাল্পনিক, কে-পপ ভক্তদের অনেকেই ‘হানট্রিক্স’ ও ‘সাযা বয়েজ’কে বাস্তব ব্যান্ড হিসেবে মেনে নিচ্ছেন। ফলে তারা এখন শুধু সিনেমার চরিত্র নয়, বিশ্বজুড়ে কে-পপ শ্রোতাদের হৃদয়ে স্থায়ী স্থান করে নিয়েছে।