হলিউডের অন্যতম প্রভাবশালী অভিনেত্রী, নির্মাতা ও প্রযোজক জোডি ফস্টারের জন্মদিন আজ বুধবার (১৯ নভেম্বর)। তিনি চার দশকের বেশি সময় ধরে হলিউডে নিজের শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছেন। প্রতিভা তাঁকে নিয়ে গেছে বিশ্বের অন্যতম সম্মানিত শিল্পীর তালিকায়। ১৯৬২ সালের ১৯ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে জন্ম নেওয়া এই অভিনেত্রীর শৈশব ভালো কাটেনি; মা-বাবার বিচ্ছেদের পর মায়ের ইচ্ছাতেই তিনি মাত্র ৩ বছর বয়সে অভিনয় জগতে নাম লেখান।
বিজ্ঞাপনচিত্রে উপস্থিতির মাধ্যমে শুরু হয় জোডি ফস্টারের ক্যারিয়ার। শিশুশিল্পী হিসেবে তিনি দ্রুতই নজর কাড়েন। মাত্র ১২ বছর বয়সে মার্টিন স্করসেজির ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’ সিনেমায় অভিনয় করে তিনি আলোচনায় আসেন। পরবর্তী চার দশকের ক্যারিয়ারে তিনি জটিল, সাহসীসহ বৈচিত্র্যপূর্ণ সব চরিত্রে অভিনয়ের দক্ষতায় নিজেকে প্রমাণ করেছেন এবং অস্কারসহ নানা পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।
তবে দীর্ঘ এই সময়ে ঘুরেফিরে এসেছে তাঁর ক্যারিয়ারের বাঁকবদলের কথা। শৈশব থেকেই অভিনয়ের আলোচনার কেন্দ্রে থাকলেও তাঁকে নানা ধরনের সামাজিক চাপ, মানসিক চ্যালেঞ্জ ও পরিচয়ের সংকটের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। তিনি নিউইয়র্ক টাইমসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘শিশুশিল্পী থেকে পরিণত অভিনেত্রী হওয়া এই রূপান্তরও সহজ ছিল না। বারবার হোঁচটও খেয়েছি। নিজের জায়গা তৈরি করতে আমাকে কঠোর পরিশ্রম, আত্মবিশ্বাস ও সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে।’
জনপ্রিয় এই তারকা ছিলেন হলিউডের সর্বাধিক পারিশ্রমিক পাওয়া নারী শিল্পীদের মধ্যে একজন। ১৯৮৪ সালে তিনি ‘দ্য হোটেল নিউ হ্যাম্পশায়ার’ সিনেমার জন্য ৫ লাখ ডলার পারিশ্রমিক নেন। ১০ বছরের ব্যবধানে তাঁর পারিশ্রমিক ৪৫ লাখ থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ লাখ ডলার। পাঁচ বছরের ব্যবধানে তাঁর পারিশ্রমিক কোটি ডলার বেড়ে যায় এবং ১৯৯৯ সালে ‘আন্না অ্যান্ড দ্য কিং’ সিনেমার জন্য তিনি দেড় কোটি টাকা পারিশ্রমিক নেন।
সিনেমার ক্যারিয়ার উজ্জ্বল হলেও ব্যক্তিগত জীবনের জোডি ফস্টার নানা সমালোচনায় জড়িয়েছেন। দীর্ঘ ২০ বছর এক ছাদের নিচে বসবাসের পর ২০০৮ সালে সিডনি বার্নার্ডের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের ইতি ঘটে। ২০১৩ সালে গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে তিনি প্রথম বিচ্ছেদের কথা জনসমক্ষে আনেন। ৬২ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী মনে করেন, ‘জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের প্রতি সৎ থাকা। খ্যাতি বা অর্থ নয়, সৃজনশীলতার মাধ্যমে সুখ আসে।’