আসানসোলের কুলটির মেয়ে, চলচ্চিত্র নির্মাতা অনুপর্ণা রায় তাঁর চলচ্চিত্র 'সংস অফ ফরগটেন ট্রিজ'-এর জন্য ৮২তম ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ওরিজনতি (হরাইজনস) বিভাগে সেরা পরিচালকের পুরস্কার জিতেছেন, যা ভারত এবং বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গকে গর্বিত করেছে।
পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার নারায়ণপুর গ্রামের এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম অনুপর্ণার। তাঁর শৈশব কেটেছে এই গ্রামেই। তিনি নারায়ণপুর প্রাইমারি স্কুল থেকে পড়ালেখা শুরু করেন এবং পরে কুলটি কলেজে ইংরেজিতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর দিল্লিতে গণযোগাযোগ বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পড়ালেখা শেষে তিনি একটি আইটি কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন। তবে সিনেমার প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা তাকে নিয়ে আসে মুম্বাইয়ে, যেখানে তিনি চিত্রনাট্য লেখা এবং পরে পরিচালনায় মনোনিবেশ করেন। পুরুলিয়ার প্রাকৃতিক দৃশ্যে ধারণ করা তাঁর প্রথম ছবি ‘রান টু রিভার’-ও প্রশংসিত হয়েছিল। কিন্তু তার দ্বিতীয় ছবি ‘সংস অফ ফরগটেন ট্রিজ’ তাকে আন্তর্জাতিক সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিয়েছে।
কুলটিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন অনুপর্ণা। তাঁর বাবা, ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডের অবসরপ্রাপ্ত প্রোডাকশন ম্যানেজার ব্রহ্মানন্দ রায় এবং মা, গৃহিণী মণীষা রায়, মেয়ের সাফল্যে আবেগাপ্লুত। ব্রহ্মানন্দ রায় বলেন, “আমরা খুব সাধারণ পরিবার। আমরা কখনো ভাবিনি যে আমাদের মেয়ে ভেনিস পর্যন্ত যাবে এবং সেরা পরিচালকের পুরস্কার জিতবে। ওর সাফল্য আমাদের গর্বিত করেছে।” মণীষা রায় মেয়ের ছোটবেলার কথা স্মরণ করে বলেন, “অনুপর্ণা সবসময়ই পড়ালেখায় মনোযোগী ছিল। তখন সে চলচ্চিত্রের স্বপ্ন দেখেনি, তবে ওর মধ্যে সবসময়ই দৃঢ় সংকল্প ছিল। যা করার জন্য সে মনস্থির করত, তা সে অর্জন করত।”
তাঁর এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির খবর Kulটি থেকে নারায়ণপুর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং প্রতিবেশীরা অধীর আগ্রহে তাঁর ফেরার অপেক্ষায় আছেন। অনপর্ণা কুলটিতে ফিরলে তার বাবা তাকে নিয়ে তাদের গ্রামে যাবেন বলে জানান। তার মা বলেন, “ও যখন বাড়ি ফিরবে, আমি ওর পছন্দের সব খাবার রান্না করব। ওকে খুশি দেখতে পাওয়াটাই আমাদের সবচেয়ে বড় পুরস্কার।”
সুত্রঃ NDTV