ক্যামেরার সামনে হাসিমুখে পোজ দিয়ে পেছনে পরস্পরের নিন্দে করা শোবিজ অঙ্গনে একরকম স্বাভাবিক। তবে ব্যতিক্রম ছিলেন বলিউডের দুই প্রথম সারির নায়িকা রানি মুখার্জি ঐশ্বরিয়া রায়। নিজেদের সম্পর্কের ঘনিষ্টতা নিয়ে রানি একবার বলেছিলেন, “আমরা চিরদিন বন্ধু থাকব।” কিন্তু একসময় রানি-ঐশ্বরিয়ার বন্ধুত্বেও ফাটল ধরে। কিন্তু, তাঁদের বন্ধুত্বে কেন ফাটল ধরল? তাঁদের বন্ধুবিচ্ছেদে নাম জড়াল বডিউডের কিং খান শাহরুখ খানের! কিন্তু তাঁদের বন্ধুত্বের ভাঙনে শাহরুখ খানের কী ভূমিকা?

ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে রানির বন্ধুত্ব নিয়ে বলিপাড়ায় তখন যথারীতি আলোচনা হয়। সেসময় ‘জিনা ইসি কা নাম হ্যায়’ নামে একটি শো-তে গিয়েছিলেন ঐশ্বরিয়া। ওই শো-তে তাকে একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছিলেন রানি। সেখানে তিনি বলেছিলেন, “তুমি জানো, আমি তোমায় ভালবাসি। তুমি জানো, আমি অসুস্থ। তাই এই শো-তে আসতে পারিনি। আমি তোমাকে ভালোবাসি অ্যাশ। আমার মনে হয়, এটা বলার দরকার নেই। প্রত্যেকের জন্য টিভিতে এটা আমাকে বলতে হত। আমি শুধু একটা কথাই বলতে চাই, আমরা চিরদিন বন্ধু থাকব।”

এমন গভীর যাদের বন্ধুত্ব, তাঁদের বন্ধুত্বে ফাটল ধরল কী করে? কয়েক বছর পর জনপ্রিয় প্রযোজক ও পরিচালক করণ জোহরের ‘কফি উইথ করণ’-শোতে সেকথা জানিয়েছিলেন রানি। সেখানে ঐশ্বর্যের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্যের কারণ জানতে চান করণ। রানি প্রথমে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। বলেন, “তুমি তো এর কারণ জানো।” তখন করণ বলেন, “আমি কিছু জানি না। চলতে চলতে আমাকে বলে যাও কী হয়েছিল।” করণের এই কথা শুনে রানি ও কারিনা কাপুর হেসে ওঠেন।

আসলে রানি-ঐশ্বিরিয়ার মধ্যে মনোমালিন্যের কারণ ‘চলতে চলতে’ সিনেমা। যে সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় ছিলেন শাহরুখ। আর নায়িকা ছিলেন ঐশ্বিরিয়া। বেশ কিছু দৃশ্যের শুটিংও হয়ে গিয়েছিল। সেইসময় সলমান খানের সঙ্গে প্রেম করছেন ঐশ্বর্য। তবে তাঁদের সম্পর্ক তখন ক্রমশ খারাপের দিকে। অনেকে বলেন, চলতে চলতে সিনেমার শুটিংয়ে চলে আসতেন সলমান। সেখানে ঐশ্বিরিয়ার সঙ্গে ঝগড়াও হতো সালমানের। এতে শুটিংয়ে সমস্যা হচ্ছিল। এরপরই প্রযোজকরা ওই সিনেমা থেকে ঐশ্বিরিয়া বাদ দেন। তাঁর জায়গায় রানি মুখার্জিকে নেন প্রযোজকরা। ঘটনাচক্রে এই সিনেমার অন্যতম প্রোডিউসার ছিলেন শাহরুখও।

রানি ঐশ্বিরিয়ার ভালো বন্ধু হয়েও তাঁর জায়গায় অভিনয় করছেন, এটা মেনে নিতে কষ্ট হয়েছিল ঐশ্বিরিয়ার। দূরত্ব বাড়ে দুই অভিনেত্রীর। শাহরুখও পরে এক ইন্টারভিউয়ে ঐশ্বিরিয়ার কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন, এই সিনেমায় তিনি একমাত্র প্রোডিউসার ছিলেন না। কারণ যাই হোক, এই একটা সিনেমা বলিউডের দুই বেস্ট ফ্রেন্ডের মধ্যে দেয়াল তুলে দিয়েছিল। আজ দুই নায়িকাই চুটিয়ে সংসার করছেন। ২২ বছর আগের সেই ‘দিওয়ার’ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়েছে কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।